আমার ব্যালকনি আর মসৃণ ট’বে জড়ো হয় শুচ্ছ-গুচ্ছ প্রজাপতি,
ভ’রে তোলে আমার নির্জনগৃহ ডানার সৌন্দর্যে, ব’সে পড়ে প্রোজ্জ্বল
আলোয়, শাদা দেয়ালের বুকে, ঘূর্ণয়মান প্রসারিত পাখায়, রঙিন পর্দার
কর্নারে তারা উ’ড়ে যায় সমস্ত গৃহে। বই, বলপয়েন্ট, দেয়ালে টানানো
ফটোফ্রেম, শাদা টাওয়াল, ড্রয়িং টেবিল আর ছাঁদের কার্নিশে জড়ো হয়
                  
নিভৃতে। উ’ড়ে যায় উচ্চভবনে, সকাল বিকাল সন্ধ্যা আর স্নিগ্ধদিনে;
আমার কোমল চুলে ব’সে পড়ে উজ্জ্বল ডানা মেলে বিষাদের গোধূলির মৃদু
ঠোঁটে। আমার সমস্ত গৃহ আজ তার হৃদয়ে গেঁথে থাকা গান, নির্মোহে
প্রাণে বেঁচে থাকে মধুর বাতাসে। টেবিলের উপর প’ড়ে থাকা আপেলে
কীটপতঙ্গের ক্ষয়ে যাওয়া আবাসে তার নিজস্ববাস। আমি বেড়িয়ে পড়ি
                  
আপন গৃহ ছেড়ে তার কঠিন অত্যাচারে, রজনী গন্ধা, হাসনাহেনা আর
চন্দ্রমল্লিকার সুগন্ধ বু’কে নিয়ে। রঙিন গোলাপের পাপড়িতে উ’ড়ে
বেড়ায় ডানা মেলে তার চতুর্দিকে। ব্যস্ততম সড়কে বেড়িয়ে পড়ি
নৈমিত্তিক কর্মভেবে, তারাও জড়ো হয় আমার কঠিন পথের নির্মোহ প্রাণে।
উইন্ডস্ক্রিন, হেঁটে যাওয়া ধূসর পথে, থেমে থাকা টায়ার আর আমার
                  
শহরের সমস্ত ময়লা-আবর্জনার কঠিন স্তূপে উ’ড়ে বেড়ায় সে আপন মনে।
আমার ম্লান চোখ বিহ্বল ক’রে তোলে তার সোনালী নিবিড় সৌন্দর্যে।
প্রাসাদ, জীর্ণকুঠির আর ভ্রাম্যমাণ দোকানে তার একক আনাগোনা মৌলিক
শুভ্রতায়। দানবের কঠিন হাতেও আজ ধরা প’ড়ে উড়ে যাওয়া প্রজাপতির
অপার সৌন্দর্য তার দিকে দিকে। নির্মোহ প্রাণে বিস্ময়ের দ্রুতি আজ মুঠোতে
ধরা দিক বাঙলার সমস্ত গৃহে প্রজাপতির গেঁথে থাকা গান চোখের আকাশে।