গাঁয়ের পথে রাখাল ছেলে নিত্য ছুটে মাঠে,
এমনি সময় বাড়ী ফিরে; সূয্য যখন পাঠে।
খন্তা’র জলে ধোয়ায় গরু সময় দুপুর হলে,
রাখাল দলে খেলায় মজে বড় হিজল তলে।
দুপুর শেষে একটু জিরোয়, ক্লান্ত দেহ আহারে...
সবুজ মাঠে শরীর হেলায় হুক্কা টানের বাহারে।


ফসল কাটা শূণ্য মাঠে একসাথে কিশোর দলে,
বিকেল সময় কাটে তাদের কানামাছি খেলার ছলে।
শালুক খুড়ায় শখের বশে পুড়িয়ে খায় আগুনে,
লাটাই হাতে ঘুড়ি উড়ায় পূবের হাওয়ায় ফাগুনে।


প্রভাত কালে গাঁয়ের বালা শিউলী তলে ছুটে,
শিশির ভেজা পা দু’খানি শিউলী হাতের মুঠে।
বিনে সুতায় মালা গাঁথে, স্বপ্ন আঁকে বুকে
সারাটি গাঁও ছুটে বেড়ায় হাসে সবার সুখে।
ঝাড়ু হাতে উঠান ঝাড়ে সকাল-দুপুর-সাঁঝে,
এক্কা-দুক্কা খেল খেলিতে পায়ের নূপুর বাজে।
লাল দুপাট্টা গায় জড়িয়ে, বেলির মালা চুলে
বউছি খেলায় উঠান জুড়ে মন আনন্দে দুলে।


গাঁয়ের বধু ঘোমটা মাথায় সিনান করে ঘাটে,
কলসী কাঁখে রাঙা পায়ে লাজুক মনে হাঁটে।
রুসই ঘরে উনুন জ্বেলে চড়ায় ভাতের হাঁড়ি,
ননদ ভাবির হাসি-ঠাট্টা কথায় কথায় আড়ি!


গাঁয়ের পথে ঝোপে-ঝাড়ে বুনো ফুলের সুবাস,
নানান জাতের টক-মিষ্টি থেতো ফলের আবাস।
ফিঙে নাচে লাউয়ের মাচায়, দোয়েল দেয় শিস
মাছরাঙাটি মাছের নেশায় নাইযে তার দিশ।