কোথায় শান্তি ধরেছে ক্লান্তি
ভিজে গেছে নোনা ঘামে
দূঃখের পাহাড় ঘিরে রেখেছে
আগে পিছে ডানে বামে।


সান্ত্বনা দেবার কেউ নেইতো ভবে
কোটি মানুষের মাঝে
অভাবের ঘরে কান্নার আওয়াজ
সারাক্ষণ কানে বাজে।


বসত ভিটাটা পরের জমিতে
বাস্তুহারা মোর জীবন
ছনের চালে জল নুইয়ে পরে
ভেঙে দেয় গ্রীষ্মের পবন।


আষাঢ়ে বর্ষায় হাটু জলে ভরে
বাড়ির আঙ্গিনা খানি
কিলবিল করে পোকামাকড়ে
আবর্জনা পচা পানি।


ভোর বেলাতে ছুটে চলি পথে
জোগাতে পেটের অন্ন
রাত্রি কালে ঘরে ফিরে দেখি
হাড়িতে খাবার শূন্য।


পরের মেয়েকে এনেছিলাম ঘরে
স্বপ্ন ছিল কত তার
আধা পেট খেয়ে সোনার দেহটা
বেরিয়ে গেছে কমল হাড়।


এক শাড়িতে বছর কেটে যায়
ছেড়া ফাটা কত সেলাই
আপন জনেরা আমারে দেখিলে
হন হন করে পালায়।


ভাবে হয়তো চায় যদি কিছু
দেখেনা বারেক ফিরে
গরীবের তরী তাই বলে কি
ফিরবেনা কখনো তীরে?


অনেক কষ্টে গতর খেটে
কেটে যায় তিন বেলা
ধুলা বালি আর রোদে পুড়ে
বেয়ে চলি জীবনের ঠেলা।


ভাল খাবার জোটেনা কখনো
এভাবে কাটে মাস
গরীবের পিঠে লাঙ্গল ফেলে
ধনীরা করে চাষ।


ধার করে কিনেছিলাম সবে
তিন চাকার ভ্যান গাড়ি
পেটের খুদায় ভোর বেলা উঠে
তারে নিয়ে ঘর ছাড়ি।


প্রখর রোদ্রে পরের বোঝা
টেনে চলি সারা বেলায়
এভাবেই জীবন পাড় হয়েছে
কেটে যায় অবহেলায়।


নায্য ভাড়া দেয়না লোকে
সমাজের ধনী যারা
কখনো আবার হুংকার ছেড়ে
দেয় সে মোরে তাড়া।


এ জগতে গরীবের লাগি
নেই তো কোথায় ঠাঁই
মরে গেছে তাই এ জীবনের
সকল অভিপ্রায়।


চল্লিশ বছর এভাবেই গেল
রোদে পুড়ে ভিজে জলে
কত বেদনা জমানো আছে
এ জীবনের পলে পলে।


আজ ও অবধি শূন্য দেখি
দেহটা বড় ক্লান্ত
বয়সের ভারে দাড়িয়ে এখন
জীবনের শেষ প্রান্ত।