আমরা তাকে ভেবেছিলাম কবি
ভেবিছিলাম তিনি শিল্পী
অথচ আজ দেখলাম তিনি ভাত খাচ্ছেন!
তাঁর অনিন্দ্য সুন্দর আঙুল তারকারির ঝোলে ময়লা হচ্ছে,
মুখের গহ্বরে সুর নয়, ঝোল মাখানো ভাতের লোকমা!


ছিঃ এ রকমটা আমরা ভাবতেই পারিনি!
আমরা ভেবেছিলাম তিনি কবি, তিনি শিল্পী
মহাকাশের ওই পার থেকে বয়ে আসা বাতাস খাবেন তিনি,
নবি ইব্রাহীমের মতো আঙুল চুষলেই তার পেট ভরে যাবে
অথচ তিনি তিন বেলা খেতে চান
তাঁর এই অসুন্দর প্রচেষ্টাকে আমরা ঘৃণা করি
প্রতিবাদ জানাই অশৈল্পিক কান্ডকারখানার।


আমরা তাকে ভেবেছিলাম কবি,
বাস করেন বেহেশতের মতো সুন্দর উদ্যানে,
তিনি আল্লাহর মতো নিঃসন্তান;
অথচ এখন শুনি বস্তির খুপড়ি ঘরের মতো তারও ঘর আছে,
ঘরে স্ত্রী আছে, পুত্র-কন্যা আছে, পিতা-মাতা আছেন--
এবঙ সেই একান্নবর্তী সংসারের জন্য তাঁকে রোজগার করতে হয়--
তিনি পাঞ্জাবী বিক্রি করেন, আতর ও তসবিহদানা বিক্রি করেন
সুন্দরবনের মধু ও চাঁদপুরের ইলিশ বিক্রি করেন,
কখনো কখনো আবার জমির দালালীও করেন--
ছিঃ এই রকম অশিল্পীসুলভ কাজ
তার কাছে আমরা প্রত্যাশা করি না!


তিনি কবি, মহান শিল্পী
আমরা যখন পান করি কিংবা আহার করি
কণ্ঠে মৃদু সুর তুলে তিনি তা আরো উপভোগ্য করে তোলেন!
ব্যবসার নানাবিধ হিসেবে ক্লান্ত হয়ে গেলে
তিনি আমাদের মনোবল ফিরিয়ে আনার জন্য লেখেন ও গান ধরেন!
যখন রাজনীতির মাঠে জাতীয়তাবাদ ও দেশপ্রেম নিয়ে
মিথ্যা আবেগে মাইকের পেছন ফাটিয়ে ফেলি--
তিনি আমাদের জন্য শ্লোগান রচনা করেন।
আর যখন স্ত্রীদের সাথে মিলিত হই-
তাঁর রোমান্টিক রচনা আমাদেরকে শেখায় কলা ও কানুনের ইতিবৃত্ত;
এর বাইরে তার কী প্রয়োজন!


তিনি শিল্পী, তিনি কবি
তিনি লিখবেন, গাইবেন
মুখে রঙ মেখে স্টেজের নানা রকম আলোতে হাত পা ছুড়বেন
আর দিনশেষে আকাশের দিকে হা করে হাওয়া পান করবেন!