কবিতা:-আজ মাটির 'পরেই শেষ
কবি:- মনোজ ভৌমিক


ওখানে মাটির 'পরে মানুষটা ঘুমিয়ে গেছে,
আর জাগবে না ও!
চির প্রশান্তির ঘুম আজ ওর চোখে,
যেন কত যুগ ঘুমোয় নি ও!
কী করে ঘুমোবে বলতে পারো?
নাবালকত্ব কাটতে না কাটতেই
বাপ চলে গেল।
জীবনের সকল শিশু স্বপ্ন গুলো,
দুটি বলদ আর লাঙলের ফলাতেই
আবদ্ধ হয়ে গেল।
দুটি বোন,একটি ভাই।মায়ের চোখের জলে
কিশোর মনকে সিক্ত করে নিল।


সেই থেকেই ওর জীবনের পথ চলা।
কর্তব্যের যন্ত্রণা ওকে আর ঘুমোতে দিল না।
কৈশোরের অব্যক্ত জিজ্ঞাসা,তারুণ্যও বুঝল না।
ঘর্মাক্ত শরীর থেকে ঝরে পড়া যৌবনের রক্ত-রস,
অনুর্বর মাটিতেও ফলিয়ে চললো বাঁচার রসদ।


যৌবনের গভীর যন্ত্রণাকে লুকিয়ে রেখে
বোনেদের বিয়ে দিল সাড়ম্বরে।
ভাইও প্রতিষ্ঠিত আজ।রয়েছে অনেক দূরে।
মা ও ছেড়ে গেল তারে, একলা ফেলে।
জীবনের একাকীত্বের যন্ত্রণা বুঝেছিল
ও পাড়ার তরুণী ময়না।
পড়ন্ত যৌবনকে মেনে নিল সে- অক্লেশে
সমাজকে ভয় পেল না।
আবার শুরু হল তার কর্তব্য আর দায়িত্বের যোজনা।
প্রৌঢ়ত্বের দোর গড়ায় জন্ম নিল
এক পুত্র আর এক কণ্যা।
প্রৌঢ়ত্ব  এগিয়ে চলল- সবাই সবার মত
তৈরি হয়ে গেল।
জড়িয়ে ধরল তাকে বার্দ্ধক্য যন্ত্রণা।
ময়নাও হারিয়ে গেল,প্রাচুর্যের আলোক মালায়।
জরাগ্রস্ত বার্ধক্যকে,কেউ আর ঘুরেও দেখল না।
জীবনের সমস্ত আক্ষেপ,আজ মাটির 'পরেই শেষ ।