কবিতা:-এখানেও কি ঢেঁকি ধান ভানে!
কবি:-মনোজ ভৌমিক


স্বর্গ দেখিনি আমি!
দেখতেও চাই না কোনো দিন।
এ মাটিতেই জন্মেছি,
এ মাটিতেই হয়ে যাব লীন।
তবুও ইচ্ছে জাগে,ভাবি সঙ্গোপনে;
সে স্বর্গের রূপ আমি দেখবো কেমনে?
শুনেছি স্বর্গটা নাকি দৃষ্টি নন্দন! অতি মনোরম!
সেখানে নাকি শান্তি অপার,অশান্তি অনেক কম?
পুরাণে পড়েছি আমি,ওখানে নাকি পারিজাত ফোটে?
সুদর্শন দেবতাগন সুগন্ধিত পুষ্প সৌরভে,
সুরা আর মদিরাতে,ঊর্বশীর নৃত্য-গীতে;
সদা অনুপম প্রেম-লীলাতে মগ্ন থাকে!


আজ এখানে দাঁড়িয়েছি আমি-- কাশ্মীরে,
একে নাকি পৃথিবীর ভূ-স্বর্গ বলে!
সত্যি অপরূপ!প্রকৃতির নয়ানাভিরাম রূপ দেখি এইখানে।
অনন্ত আকাশ যেন ছুঁয়ে গেছে পাহাড়ের বুক;
পাহাড়ের ঢাল বেয়ে নেমে গেছে স্বতেজ-সবুজ।
প্রজাপতি পাখনা মেলে,উড়ে যায়, বাহারি ফুলের দেশে;
ভ্রমরেরা অলিদের মন ভরে, গান গেয়ে গেয়ে।
মধুপরা ফুলের মধু শুষে নেয়,অসীম খুশীতে।
জগতের সাত রঙে ভরে গেছে এ স্বর্গের বুক;
এখানেই রয়েছে হয়তো, সেই পারিজাত ফুল!
নির্ঝরের নির্মল ধারা বয়ে চলে অবিরাম;
ভাবি আমি কোথায় আছি!এ কি সেই স্বর্গ! নয়নাভিরাম।
কৌতুহল উদ্দীপ্ত মন,ভাবে ক্ষণে ক্ষণে;
কোথা আছে ঊর্বশী সকল? কোন পুষ্পকাননে?
আরো ভাবি,পৃথিবীর এই নন্দন কাননে,দেবতা আছে নিশ্চয়!
চেয়ে দেখি, হা-ভাতে মানুষগুলি,সোচ্চার হয়।
লাল রক্তের ছটা পড়ে আছে,এখানে ওখানে;
তাহলে কি দেবতারা হেরে গেছে,অসুরের সনে?
না,এখানেও দেবাসুরের খেলা চলে নিরন্তর!
এখানেও কি ঢেঁকি ধান ভানে,স্বর্গের মতন?