কবিতা- ওরা নাকি রাস্তার ছেলে
কবি:- মনোজ ভৌমিক


হেমন্তের কুয়াশাভরা চোখ নিয়ে একদল ছোট্ট শিশু ব্রীজের নীচে
শীতেতে জড়োসড়ো হয়ে বসে আছে ছেঁড়া ত্রিপলের ঘরেতে।
অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকে উঁচু উঁচু ফ্লাটের দিকে।
ওখানে নাকি মানুষ থাকে!
তাই তো প্রতিদিন সন্ধ্যাবেলায় উপর থেকে ফেলে দেওয়া উচ্ছিষ্ট খাবার
কুকুরের সাথে ভাগ করে খেতে হয় তাদেরকে।
ওরা নাকি রাস্তার ছেলে!
বাবা-মা সকাল থেকে বেরিয়ে যায় হাড় ভাঙা জেলে।
সন্ধ্যাতে তাদের ক্লান্ত অবসন্ন শরীর
ঢলে যায় মদের নেশাতে মাটির বিছানার 'পরে।
তাইতো ওরা আস্তাকুঁড়ে উচ্ছিষ্ট খোঁজে।
ওদের নাম তাই কী রাস্তার ছেলে?
আগামীতে ওদের সওদা হবে- ফুটপাতে,জলের দরে
চোর-জোচ্চর-পকেটমার নয়তো ভিখারীর ছদ্মরূপে প্রকাশ পাবে।
আর ওরা!এক রাশ রূপ নিয়ে গলির আঁধারে
বলবে মুচকি হেসে,"এসো গো বাবুরা,মনের মধু যাও খেয়ে।"
ওদেরোতো সাধ জাগে মনে, স্বপ্ন দেখে আধ ঘুমো চোখে
বই পড়ে ওরাও মানুষ হবে,তোমাদের ছেলেদের সাথে।
একমুঠো রূপালী জোৎস্না,এক চিলতে সোনালী রোদ্দুর
যদি ভোরে দাও ওদের হৃদয়ে,ক্ষতি কী তাতে?
ঐ মানুষগুলো, যারা আজ চোখ রাখে,ওদের রূপালী স্বপ্নের সাথে।
তারাই তো প্রকৃত মানুষ ওরে
বাকী সব মানুষ নামের ফানুশ যে রে।