আজ যখন চরম দূর্বিপাকের মধ্যে সমগ্র পৃথিবী
এক অনির্বচনীয় আশঙ্কায় শঙ্কিত মানুষ-জন,
ঠিক তখনই, সূর্য্যাস্তের লালিমায় লালাভ সারা দিগন্ত।
কোথায় আমি! কোথায় তুমি! কোথায় বা স্বজন-পরিজন!
কেবলই নিজের অস্তিত্ব বাঁচানোর দূর্বার প্রচেষ্ঠায়
মরিয়া হয়ে উঠেছি আমরা।
নিজত্বকে এত বেশী করে প্রাধান্য দিয়েছি
পরের দঃখকে বোধ করাবার প্রহসন করি মাত্র।
ক্ষুদ্র স্বার্থকে বড় ক'রে, একে অপরের সঙ্গে
হিংসা-বিদ্বেষের প্রতিযোগীতায় হচ্ছি লিপ্ত।
প্রকৃতির করাল দৃষ্টিতে বার বা হয়েছ পর্যূদস্ত।
তবুও কি মনে হয় না কোথায় তোমার অস্তিত্ব?
ভূমিকম্পে ঢাকা পড়েছে তোমার অস্তিত্ব।
সুনামির মত ঢেউয়ে মুছে গেছে তোমার কৃতিত্ব।
তবুও কেন এই অস্থিরতা!
কেন ধুয়ে মুছে ফেলতে পারো না তোমার চরিত্রের কালিমাকে?
মনে করো সেই রূপসী বাংলার কথা
চারিদিকে সবুজ আর সবুজ, তারই বুক চিরে ধেয়ে চলা
আঁকাবাঁকা লাল মাটীর পথ।
দূর-দিশা হতে কানে ভাসে, বাউল গানের মন ভরানো সুর
আন্তরিকতার জোয়ারে, পদ্মা ও গাঙ্গার কলহাস্যে
ভাদু আর ভাঁটিয়ালী গানের সুরে
জীবন হয়ে উঠত আনন্দ মুখর।
হারিয়ে যেতে বসেছে প্রত্যুষের পাখীর কুজন।
হারিয়ে গেছে অপুর বিস্ময় ভরা চোখ।
সেই চোখে ভেসে উঠেছে হ্তাশা আর আস্থিরতার প্রতিচ্ছবি।
বিকলাঙ্গ হয়ে পড়েছে সমাজ।
কু-শিক্ষার অন্ধকারে ডুকরে কাঁদে শিক্ষার বর্ণপরিচয়।
সুকান্তের 'বিপ্লব আজ স্বার্থ কেন্দ্রিক।
নজরুলের 'বিদ্রোহ' আজ নিজের জন্য।
রবীন্দ্রনাথ আর শরত্চন্দ্রের 'আন্তরিকতা'
আজ হ্যালোজেনের আলোয় খুঁজতে হবে।
এখনো সময় আছে বন্ধু,চেষ্টা করো।
তবে হয়ো না বেইমান।
পারো যদি হয়ে দ্যাখো, ঊনবিংশ শতাব্দীর মত
এক শ্রেষ্ঠ বঙ্গ সন্তান।