কবিতা:- সময়ের স্রোতে ভাসো
কবি:- মনোজ ভৌমিক


সাঁঝের বেলায় গিন্নী বলেন "এদিকে তাকিয়ে দেখো,
জিন্স-টপেতে লাগছি কেমন? সঠিক করে বলোতো।"
মুচকি হেসে বললাম তারে "লাগছো তুমি দারুণ,"
এই কথাতেই দেওয়াল আয়নার চেহারা হল করুণ।
ও আয়না,তুই মুখ ঢাকনা,এখন দেখা বারণ,
একটু কিছু বললেই তুই, হবেই আমার মরণ।
শ্রীমতী আমার একটুখানি চোখ বাঁকিয়ে দেখে,
বললাম আমি গম্ভীর হয়ে,"আর দেখাবে কাকে?"
এই কথাতেই গিন্নী আমার হঠাৎ তেলে বেগুনে,
"আর কারেও না, দেখাচ্ছি আমি আকাশ ভগবানে।
প্রথম প্রথম দেখতে আমায় দারুণ আবেগ নিয়ে,
আজকে যখন সাজি আমি,কেন নিচ্ছ চোখ ফিরিয়ে?"
হঠাৎ করে মুখটি আমার হলো তখন বন্ধ,
একটুকিছু বললে পরেই পাবো বারুদের গন্ধ।
শ্রীমতী আমার ছোট্টখাট্টো, বয়স যায় না বোঝা,
রাস্তায় যখন বেরোন উনি,বয়সটা যায় না খোঁজা।
লিফস্টিক আর চোখ-কাজলে লাগেন ভারি মিষ্টি,
ছেলে বুড়ো ল্যাংড়া ন্যুড়ো সবাই, ফেলেন বাঁকা দৃষ্টি।
ভাবছি বসে কদিন পরে নতুন বছর আসছে,
সাদা চুলটা করবো কালো জিমেতে মন টানছে।
পেটের চর্বি কমিয়ে এবার,বডিটা রাখবো ফিট,
জীন্সপ্যান্ট আর টি-সার্টেতে হিরো সুপার হিট।
এই ভাবনায় গিন্নী আমার বলেন বত্রিশ বার করে,
"তোমার জন্য সাজছি নাকি?থাকো কবিতা নিয়ে ঘরে।"
হঠাৎ করে গালের 'পরে হাতটি রেখে ভাবি,
জমানাটা বদলে গেছে বদলাচ্ছে আজ সবি।
একটুখানি তুমি বদলালে, আর ক্ষতিটাই বা কি!
জুতোর হীলটা কমিয়ে নিয়ো,নইলে বলবে ওরা ছি:!
বয়স তোমার যতই বাড়ুক,মনটা এমনি রেখো,
এদিক ওদিক যতই ঘোরো,মিডিয়াতে ঘুরে দেখো।
যেমন খুশি তেমন সাজো'পুরস্কারটা আমার চাই,
নইলে পরে বিশেরা বলবে,ঠিক লাগছে না দিদিভাই।
জীবনটা তো একটাই ভাই প্রাণটি খুলে হাসো,
সময় চলুক সময়ের মত, সময়ের স্রোতে ভাসো।