. আজ ২১
আজ অমর একুশ।
আজ স্মৃতি ঘেরা একুশ।
আজ বিদগ্ধ নীলিমার-
কষ্টে পাওয়া একুশ।
আজ প্রাণ হারানোর দিন!
আজ হৃদয় রক্তে রঙ্গিন।
আজ সেই কষ্টে গাঁথা দিন
যে দিন গেয়েছিল একাত্বতার গান,
আজ সেই রক্তে মাখা দিন
যে রক্তে ভিজেছিল শহীদাত্মার প্রাণ!
আজ সে দিন, যে দিনে-
দামাল ছেলেরা
থামেনি তবু-
দেয়নি মান;
অমানুষের হাতে,
যারা চেয়েছিল
বাংলা ভাষার
সবুজ আশা
অনায়সে গ্রাস করতে।
ওরা, বিষের ছোবলে ছিন্ন করতে চেয়েছে বাংলা ভাষা
শুন্য স্বপন ফিরিয়ে দিয়েছে মেটেনি তাদের আশা।
মিটবেনা কোনদিন,
এ যে আমার মায়ের ভাষা
স্বপ্ন রং এ রঙ্গিন।
এ আমার সবুজে ঘেরা
লাল পতাকা
তির ঘেঁসা এক বীর,
এ আমার লাল চাদরে
জমাট বাঁধা
লক্ষ মায়ের তীর।
ওরা, কেমন করে পারবে বল নিতে মুখের ভাষা,
এ যে, আমার মায়ের সাত জনমের হাজার শিশুর আশা।
পারবেনা কোনদিন,
এ যে আমার ভাই হারানোর
রক্তে পাওয়া সু-দিন।
আজ সেই দিন,
যে দিনে উত্তাল হয়েছিল
বাংলার সন্তান।
যাদের লক্ষ্য ছিল
যাদের বাসনা ছিল
“গড়ে তোল প্রতিরোধ”
ভেঙ্গে ফেল সে আশা,
“উর্দ এবং
উর্দই হবে রাষ্ট্র ভাষা”!
বল, বাংলা মায়ের মুখের ভাষা কেমন করে উর্দ হয়?
যেমন করে বাংলার বীর চিনিয়ে দিয়েছে তাদের লয়।
ভুলবেনা কোনদিন,
এ যে আমার বোনের অশ্রু-
হয়নি যা বিলিন।
আজ রক্তে ভেজা দিন,
যে দিনে পথে বেঝেছিল
প্রতিবাদের গান।
ভাঙ্গতে তাদের দল
ঘোষিত ’৪৪!
রুখতে পারেনি তবু
বাঁধ ভাঙ্গা সে বিষ।
ভেঙ্গে দিয়ে সব জারি,
নেমেছিল বাংলার পথে
দূর্বার কত নারী।
সবার মুখে একই গান চাওয়া শুধু এক টাই
ঢালবো রক্ত, চুষবি তোরা রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই।
মুছবেনা কোনদিন,
এ যে আমার রক্তে ভেজা
শহীদদের সম্মান।
ভয় পেয়েছিল ওরা
করেছিল গুলি,
উড়েছিল সে গুলিতে
রাজপথেই খুলি!
সালাম বরকতের রক্তিম রক্তে
রঞ্জিত রাজপথ,
শত উদ্যমে একত্রিত যুবা
উল্লাসিত পথঘাট।
ওরা, কেমন করে করবে দমন এমন মায়ের ছেলে,
যারা, হুশ পেয়েছে- বেহুশ হয়ে- নতুন বউকে ভুলে!
হবেনা কোনদিন,
এ যে সোনার ছাঁচে পোড়া
মায়ের দুধের ঋন।
আজ সেই ২১
স্মৃতির পটে গেঁথে থাকা ৫২’র ২১
অর্ধ-স্বপন, দেহের টানে বেহুশ হওয়া হুশ।
দুঃখের গানে কলতানে ঐক্যে বাঁধা তান,
ভাষার টানে উড়িয়ে দেয়া রক্তে ভেজা প্রাণ!
( ২১ শে ফেব্রুয়ারী, ২০০৪ # ২৯১)