একটা জমি কিনতে চেয়েছিলাম। বায়নাপত্রও করেছিলাম।
সাকুল্য মূল্য নগদে পরিশোধ। দিন ক্ষণ সব ঠিক। বাকি ছিলো কেবল রেজিস্ট্রেশন।
হয়নি। দুর্মূল্যের বাজারেও আরেকজন বেশি মূল্যে কিনে নিলো।
জমির চোখে জল ছিলো। আমার চোখেও জল ছিলো। বুঝতেই পারছিলাম।
বেলা তখন অবেলা।  তবে জানতাম, দিন যায়। দিন ফিরে।
ঝড়ে লণ্ডভণ্ড নীড়ও পাখি একদিন ঠিকই গড়ে। আমিও নিয়েছিলাম।


জমিটা এখন সেচবিহীন। খরতাপে ফেটে চৌচির। ফুল নেই। ফসলও নেই।
রাত্রির অন্ধকার আছে। খাঁ খাঁ শুন্যতা আছে। চোখে জল নেই। শুকিয়ে গেছে।
বৃষ্টি নেই। বৃষ্টির আশাও নেই।
চিরল দাঁত আছে। তবে চিরল দাঁতের সেই হাসিটা নেই। বাসি হয়ে গেছে।
অকারণ রেগে উঠে। ফুলদানিতে রাখা বাসি ফুলের মতো ভেংচি কাটে।


এখনও সেই হাঁটু সমান লম্বা চুল আছে। যত্ন নেই। আগাছার মতো লাগে।
অথবা মরা গাঙের মতো। পানসি বিহীন আকাশগঙ্গা।
তবে অনুভূতির প্রখরতা সেই আগের মতোই আছে।
যেন একেবারে শানানো তলোয়ার। আড়াল থেকে খোঁজ খবর রাখে। পায়রা উড়ে।
প্রজাপতি হাসার চেষ্টা করে। হাসি আসে না। বাসি দীর্ঘশ্বাস আসে।
কেউ বুঝতে পারে না। আমি বুঝতে পারি।


আমার এই বুঝতে পারা না পারার গল্পটা মাঝে মাঝে কেঁদে উঠে।
তখন বায়নাপত্রটা বের করে সংগোপনে পড়তে বসি। বুকটা ধুঁক ধুঁক করে।
এই বুঝি নিজের কাছে নিজেই ধরা পড়ে গেলাম। মরমে মরে যাই।
তবু বায়নাপত্র ভাঁজ করে রেখে দিতে পারি না।
তখন আমি চুপ করে থাকি। আর আমার চোখের জল কবিতা লেখে।