ছেলেটা এতিম হয়েই জন্মেছিলো। মাথার উপর ছায়া ছিলো বাপের বাপ।
এখন আর কোনো ছায়া নেই। তবে মাথার উপর আকাশ আছে।
অবশ্য আকাশ সবার মাথার উপরেই থাকে। সে কাউকে আশ্রয়হীন করে না।
বুকে আগলে রাখে। মায়ের মতো। ভাত দিতে না পারুক; মমতা দিতে পারে।


সেই ছায়াসন্তানকে একটা দানপত্র লিখে গিয়েছিলো। এখন আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
কেন পাওয়া যাচ্ছে না? সবাই জানে। বাপের ভাই চাচারা গিলে খেয়েছে।
কংস মামার কথা সবাই জানে। কংস চাচার কথা কেউ শুনেনি।
দিনকাল যা পড়েছে! যা শুনিনি তাই শুনছি। যা দেখিনি তাই দেখছি।
আরও কতো কী দেখতে হবে? কেবল ওপরওয়ালাই বলতে পারে। সে সব জানে।


মূষিক পাহাড়ের কাছে গিয়েছিলো। একটা দানপত্র লিখেয়ে নিতে চেয়েছিলো।
পাহাড় দিতেও চেয়েছিলো। সাথে সাথে আরও অনেকেই গিয়ে হাজির হলো।
পাহাড় সব বুঝতে পারলো। সে হাতেম তাঈ নয়। হাতেম তাঈ হতেও চায় না।
সবাইকে ঝেটিয়ে বিদেয় করে দিলো।
এখন সবাই সব বুঝতে পারে। কেউ কিছু করতে পারে। কেউ করতে পারে না।


জনগণ জানে। দেশের মালিক তারাই। এই জানা জানা নয়। সব সত্য সত্য নয়।
তাই তারা একটা কাজ করেছে। রাজনীতিবিদদের অলিখিত দানপত্র লিখে দিয়েছে।  
এখন তাদের হাতে কোনো ক্ষেমতা নেই। স্বত্ব হারিয়ে পুতুল সেজেছে।  
বাজিগর যেমনি নাচায়; তারাও তেমনি নাচে। পুতুল নাচ দেখতে কার না ভালো লাগে!
সুখের পুত মাঝে মাঝে ভুতে কিলায়। তাতে সুখ  যেমন আছে। বেদনাও আছে।


আসল কথাটি এখনও বলা হয়নি। কেউ শুনতে চায় না। তবু বলি।  
একজনকে একটি দানপত্র লিখে দিয়েছিলাম। সে নেয়নি। ফেরতও দেয়নি।  
তাতে সব ছিলো। স্বপ্ন ছিলো।  সুখের গ্যারান্টি ছিলো।  আলাদীনের চেরাগও ছিলো।
তবু সে দানপত্রটি ছিঁড়ে ফেলল। সবাই তাকিয়ে দেখলো। কিছু বললো না।
মনে মনে মজা পেল। অন্যের ভালো কেউ চায় না। সবাই নিজের ভালো চায়।