বারবার মনে হচ্ছে দিন কয়েক আগের এক মাঘী পূর্ণিমার রাত
প্রিয় শব্দগুলোকে ঢাল-তলোয়ার বানিয়ে আমিও তখন এক যোদ্ধা,
সমস্ত আসমান ছাপিয়ে মায়াবতি জোছনা নেমে এসেছিলো আমার
অতি আদরের সমস্ত উঠোন, একপাশে আপনি গজিয়ে উঠা পুঁই
লতা, ডাটা আর শিমের লতানো ডগা-- সবাই মেতে উঠেছিলো
জোছনার সমুদ্রে জল সাঁতরের আনন্দে!


আমিও তাদের সেই আনন্দে ভাগ বসাতে উন্মুখ ছিলাম, উন্মুখ
ছিলো আমার কাঁধে আজন্ম ঝুলানো চটের ব্যাগ, ব্যাগের ভেতরের
গুটিকয় টুকরো কাগজ, একটা কলম, ভাঙা আয়নার কয়েকটা
কাঁচ আর অর্ধেকটা চিরুনি; আরও উন্মুখ ছিলো কাগজিলেবুর
ঝোপ, ডুমুর পাতায় টুনটুনির বাসা, জারুল- কৃষ্ণচুড়ার সদ্যফোটা
ফুল ওরা—আমরা সবাই তোমার পথ চেয়ে উন্মুখ প্রহর গুনছিলাম!


যখন ভরা জোছনার প্লাবন আস্তে আস্তে ম্লান হচ্ছিলো, বাতাসে
ভেসে আসছিলো শিয়ালের কন্ঠে ট্রাজিক কবিতার ধ্রুপদী আবৃত্তি
তারা গুলোও একটার পর একটা হাল ছেড়ে দিয়ে পলায়ন উদ্ধত
জানো, তখনও আমি এতোটুকু বিশ্বাস হারাইনি; এমন কি হাত থেকে
মাটিতে নামিয়ে রাখা আমার চটের ব্যাগটিও এতোটুকুও কেঁপে
উঠেনি, মান্দারের ঝোপ কেটে কেটে একটার পর একটা সাপ,
বেজি আমাকে মসকারা করতে করতে চলে গেলো, তাতেও আমি
হেরে যাইনি---!


অতঃপর যখন দেখলাম কালপুরুষ জেগে উঠেছে, সপ্তর্ষিমণ্ডল
ঘুরে ঘুরে ক্লান্ত হয়েছে মশা আর মশার মতো আরও কিছু শক্তিধর
পোকা, তখন আমি নির্জন বনভূমির কাছে অন্ধকার চাইলাম;
তোমার শহর নিয়ে তুমি বেশ থাকো--- বে----শ
ল্যুভরের মতো কোনো এক মিউজিয়ামে নিজেকে সাজিয়ে রাখো
আমি আবার বুনো পথে হেঁটে যাবো--- হেঁটে যাবো ----------!!