মানবিক মুক্তির কথা বলতে চাই –কাকে বলবো--- কাকে?
সবাই নিজের কথা ভাবে, স্বাধীনতা শব্দটিকে সবাই নিজের করে নিতে চায়!
যে যেভাবে পারে সেভাবেই কেবল জোছনার স্কেচ আঁকে
কেউ ফুল হাতে আর কেউ ভুল বুলেট হাতে স্বাধীনতা শব্দটিকে কিনতে চায়!
আর কেউ যুবতীর বিস্ফোরক বক্ষে স্বাধীনতার কেতন উড়ায়
আমি বসন্তের জানলা খুলে শীতের গন্ধ শুঁকি, মাঝে মাঝে চাঁদকেও অবলা
মেয়েমানুষ মনে হয়; আমি তখন সর্বত্র অন্ধকার দেখি!


সেই অন্ধকার আমাকে দিয়ে কবিতা লেখায়, ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে বসে জয়নুলের
মতো ছবি আঁকায়; আমার ছবিতে প্রাণ ফিরে আসে না!
পাথর সহবাসে অন্ধকার যেমন আরও অন্ধকার হয়, আলো আসে না;
তেমনি আমি সন্তর্পণে আমার প্রিয় স্বাধীনতার বুকের বেদনা লুকাই  
আমি আমার ভেতরের আগুন বারবার ছাইচাপা দিই, ওকে হাসাই –কাঁদাই;
মিছেমিছি শিরিষ কাগজে ঘষে ঘষে চেতনা ধার দিই
অনাদায়ী মানবিক দেনার কথা তবুও আমার মনে পড়ে না!


মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে জন্ম-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণ ঘুমায়, আমার দূরগামী
চোখ আকার দেখে, নিরাকার দেখে; লোনা জলে বেদনার ছবি আঁকে!
সবাই যখন সবার স্বাধীন আঙুল উঁচিয়ে ঘোষণা করে আদিম বর্ণচ্ছটা
তখন আমার ঘুম আসে না, নীরবে-নিভৃতে কাঁদে আমার নির্লিপ্ত ব্যক্তিস্বাধীনতা;
একদিন সবার কথা ভেবে আমিও স্বাধীনতা শব্দটিকে নিজের করে চেয়েছিলাম
স্বাধীনতার কাছে হাঁটু গেঁড়ে নতজানু হয়েছিলাম
উপমার আচ্ছাদন থেকে আমার প্রাণের কবিতাকে মুক্ত করতে চেয়েছিলাম
আপাদমস্তক অনাবৃত করে দিতে চেয়েছিলাম পৃথিবীর সমস্ত শব্দের শরীর
নিস্তব্দতা ভেঙে জাগিয়ে তুলতে চেয়েছিলাম স্বাধীনতার প্রকৃত চেতনার আবির
অথচ
আজও আমি মানবিক মুক্তির ফরিয়াদ নিয়ে বৃক্ষের দরবারে দুয়ারি হই
আজও আমি আমার সমস্ত শরীরের গিঁটে গিঁটে প্রসব বেদনা অনুভব করি
আমি জাতিসংঘের কথা ভাবি না --- ভাবি না কাগুজে মানবাধিকারের কথা
তাদের কারো শরীরে পানির ছিটা লাগে না
আমি আমার নিজের কথা ভাবি, আমি আমার শব্দের অবমুক্তির কথা ভাবি
আমি ইদানিং আমার প্রাণের বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে গজিয়ে উঠা দুর্বৃত্তের
কথা ভাবি— -------
আমি আফগানিস্থান হতে চাই না
আমি সিরিয়া হতে চাই না, ইরাক, লিবিয়া, ইয়েমেন, সোমালিয়া হতে চাই না
আমি চাই স্বাধীনতা শব্দটি সত্যিকার অর্থেই একান্ত আমার হ উ ক ----- আমার!!