বেশ তো ছিলাম –
ছোট্ট এক নিশ্চিন্তি ঘরে
সবুজে সবুজে ঘেরা চারকাঠায়  
বেলি জুঁইয়ের আঘ্রানে যেত আঙিনা ভরে ।
আম কাঁঠাল লিচু বাতাবী গাছে
ফিঙে চড়ুই শালিকের গানে  
লাল মোটা ভাতের মিঠে ঘ্রানে
ভরে যেতো মন-প্রাণে ।
বিকাল-সন্ধ্যার সন্ধিক্ষণে
সিঁদুরে রাঙানো সূর্য ডোবার পালা
পুকুর পাড়ে স্নানের ঘাটে
অপরূপ সে রূপের ডালা ।
সন্ধ্যাপ্রদীপের শিখায়
সাঁঝবেলা ভরে তুলসী তলা
প্রিয়র ঘরে ফেরার তরে
প্রতীক্ষায় কত না-কথা বলা ।
নিঝুম রাতে দাওয়ায় বসে
চুপি চুপি সুরের আনাগোনা
দূরে বাজতো মাদলের তাল
প্রেমে গাঁথা মালার সুর বোনা ।
হঠাৎ একদিন –
প্রভাবশালী বাহুপেশীর ধমকে
ভেঙ্গে গেল কাঙ্ক্ষিত সুখের দোর
ছন্দের বাঁধন খানখান হোল
নিশ্চিন্তিপুরী এফোঁড়-ওফোঁড় ।  
কংক্রিটের বদ্ধ আচ্ছাদনে
মাটি থেকে উঠল ঘরের পর ঘর
মনের মাঝে কুরে কুরে খায়  
অব্যক্ত যন্ত্রণা বাড়ায় কলেবর ।
হারিয়ে গেল নিশ্চিন্তি
মধুর স্মৃতির পট
নিউক্লিও প্রেমে আবদ্ধ মোরা
বুকে জমা বরফে কঠিন রোবট ।  
ছোট্ট ভেলায় দাঁড় টেনে যাই
ভাসমান জোছনার প্লাবনে
যদি ফিরে যেতে পারি আবার
স্বপ্ন মাখা হারানো শ্রাবণে ।
বেশ তো ছিলাম -
ছোট্ট এক নিশ্চিন্তি ঘরে
সবুজে সবুজে ঘেরা চার কাঠায়
বেলি জুঁইয়ের আঘ্রাণে যেত আঙিনা ভরে ।।

   ****************