কোনকালে এ শহরে সাহেবরা ছিল ।
এখনও দেয়ালে সাঁটা সাহেবের ছবি-
নীচে লেখা- 'ভারতীয় পোষ্যপুত্র গন,
ভুলেও ভেবনা তুমি ভারতীয় কবি ।
সাহেবরা নিয়ে গেছে শহরের দামি ভালবাসা-
ছেড়ে গেছে দু/একটা সাহেবি কুকুর
তাদের বংশ বেড়ে আজকাল পথে
শোনা যায় গর্জন- মনে হয় বিদেশি কোন শব্দ সমুদ্দুরঃ
এর চেয়ে  অ-নে-ক ভাল',
জন্মের শহর ছেড়ে চলে যাওয়া পাহাড়ের নীচে;
সবুজ ঘাসের কাছেঃ
এখানে বাসের ভূমি নকশি কাঁথায় ছাওয়া মনের মতন।
কাঁথার উপর শুয়ে ফটিকের কেটেছিল শৈশব-যৌবন'
ভোরের আলোর সঙ্গী মোরগের ডাকে'-ঘুম ভেঙে গিয়েছিল;
ছুটেছিল জামরুল কখনও বা পাতাঘন কাঁঠালের গাছটার তলে।
বেসাহারা বন্ধু ওর মাঝেমাঝে দেখা পেত-
ডিঙি বায় জিরি-টিরি অথবা স্বর্ণবতী'-রুক্মিনীর জলে
ঘরে ফিরে খুশি হত শালিখের সারি বসে চালের উপর।
আকাশটা নেমে এসে বলে যেত-শালিখের মাথার টোপর।
এ শহরে ঝুল জমে লজ্জায় নত যত কবিদের কবিতার খাতা
পাইনের ছায়া পড়ে ঝর্নার জলধারা মন্দাকিনীর মত বইতে পারেনা আজ- নয়াণজুলিতে মিশে গেছে
ফটিক দেখেছে তার জীবনটা বৃথা
মনের মানুষ নেই কাছে।
পাহাড়ের নীচে ওই সবুজ ঘাসের বুকে এখনও ছড়ানো ভালবাসা
ধানের শীষের পরে, বাতাস ঊর্মিমালা ছড়িয়ে দিতে্‌ই,
হৃদয় অবাধ্য হয়,- বেঘর জীবন তবু মদিরার নেশা
এখানে কুঞ্জবনে ফলের বাগানে ঘুরেফেরে-অনাহুত বন্য শ্বাপদ
অবাক ফটিক ভাবে এদের মধ্যিখানে বেঁচেথাকা যদি নিরাপদ
শহুরে কুকুরগুলো কেন তবে যন্ত্রনা দিল
আত্মার সংবাদ- এ শহরে সাহেবরা ছিল।।