আটপৌরে নীল ডুরে শাড়ীটা রোজ-
শুকায় দখিন খোলা বারান্দায়!
ঝড়-ঝাপটা সামলায় অনায়াসে সে-
মধ্যবিত্ত জীবন যাপনের!


মনে রাখে সবজীওয়ালার চেনা ডাক-
ফুলওয়ালী মাসির বেসুরো সুর!
কাজের বৌ'এর কলোরব সামলায় রোজ-
যেন চড়ুইদের চড়ুইভাতি!


আটপৌড়ে নীল ডুরে শাড়ীটা তবু-
স্বপ্ন দেখে আকাশ ছোঁয়ার!
বহুদিন চোখ দেখেনি বইয়ের পাতা-
নিয়ম মেনে সিদুঁর ছোঁয় নোয়া!


লক্ষ্মীবারের পাঁচালী সন্ধ্যাকাশে ভাসে-
নিখুঁত রামায়ন পাঠ!
খাসা রাঁধুনী,সজাগ দৃষ্টি চারিদিক-
কলম ভুলেছে পথ!


আটপৌরে নীল ডুরে শাড়ীটার আজ-
বহুদিন পর অন্য আকাশ!
আপন আকাশ খাতা-কলমের সাথী-
বারান্দায় ঝোলে না সে আর!(আটপৌরে)
---


"যদিদং হৃদয়ং তব/তদিদং হৃদয়ং মম"...


ভেসে আসে মন্ত্রের সুর...
অন্ধকার ঘরে পড়ে আছে
এঁটো শরীরটা,
ঠিক যেন মর্গে পচছে দেহ-
বেওয়ারিস লাস-কেউ খোঁজ রাখে নি!


একটা বিয়ে হয়েছিল অগ্নিসাক্ষী করে...
তারপর থেকে আগুনের ছেঁকা,
নিত্য দিন-শরীর এবং মনে!


ভালোবাসা-ভেসে গেছে,যেন খড়কুটো!
বহুবার ভাবে-উষ্ণতা দিয়ে জড়িয়ে রাখি এসো;
খুব কাছে এলে ঝড় শুনতে পায়,অন্য মোহিনী ঝড়! বিলাসিতা!


রাত বাড়ে,বাড়ে মাতাল!
তিক্ত ছোঁয়ায় ঘেন্না!
শুধুই ছোঁয়া? না কি নাকি মাংস চিবিয়ে খাওয়া!
কালসিটে দাগগুলো কোমলতা খোঁজে!


সূর্যে-চন্দ্রে অবিশ্বাস! কেন ওঠে!
আলো? সে কি দিতে পারে?
মুখ লুকাও,লুকাও মুখ...মেঘের চাদরে!


কি জানি কোথায় আবার জ্বলে আগুন,পোড়ে খই! অগ্নিসাক্ষী!
সাত জনমের অগ্নিপরীক্ষা?
সুর ভেসে আসে কানে...মন্ত্রের!


"যদিদং হৃদয়ং তব/তদিদং হৃদয়ং মম"...(অগ্নিসাক্ষী)


---
"বকুল-প্রিয়া","বকুল-প্রিয়া"... একই নামে কেটে গেছে সতেরোটা বছর! আনকোরা বইয়ের পাতার গন্ধ যেন আজও ওই নামে! স্পর্ষকাতর প্রেম অবনীর!


ঠিক যেন একজোড়া শালিক,বারান্দায়-উঠোনে-ছাদে-পুকুর ঘাটে! বসন্ত বাহারে,শরতের কাশে,পূর্নিমা'র চাঁদে কিংবা সূর্যের গ্রহনে দুই প্রান মিলে একাকার!


একটু ছুয়ে যাওয়া হাত,বিদ্যুৎ ঝলকানী সম-দুঃখ ফেরায় মুখ! ইতিহাস শোনায় প্রেম! কিন্তু ওরা তো ইতিহাস নয়-জানে মিত্তির বাড়ীর অলিগলি!


সবার অলক্ষে বহুবার কথা বলে চার চোখ! খিলখিল হাসির জলতরঙ্গে বেহাল হয় অবনী,তবু আরও প্রেম চাই!


মিত্তির বাড়ীর বারান্দাটা দেখেছে বহু,চারপুরুষের গল্প জানে! সেরা গল্প-অবনী-প্রিয়ার প্রেম! আজ শব যাত্রায় প্রিয়াকে বিদায় দিলো হাসি মুখে-" ভালোবাসি ভালোবাসি"..রবি ঠাকুরের সুরে!


অন্তরমহল খালি? না তো! প্রিয়া আজও জুড়ে আছে সবটুকু!
(অন্তরমহল)


---
দখিনখোলা একফালি অলিন্দ টা,
নাম 'ত্রয়ী'..মেজ বৌয়ের দেওয়া নামখানি। মিত্তির বাড়ির বহু ইতিহাস মনে পড়ে ওর।


উঠোনের মাঝখানে তুলসি তলায় শোয়ানো দেহ! বড়দার 'বকুল-প্রিয়া'..ওদের সবার বড়দি! তিন জা' তিন 'সই'!


অলিন্দ জানে কোনও ঘর ভালোবাসা,কোনও ঘর স্বপ্নের আবার কোনওটা ঠাসা কালসিটে অভিমানে,লাম্পট্যে!


ছোটটি ডুকরে কাঁদে,মেঝটি একমনে আকাশ দেখে...হ্যাঁ ওইখানেই তো বড়দি গেছে! বহুদুরে! রোজ দেখা যাবে হয়তো শঙ্খচিলের ঝাঁকে কিংবা বহু ভিন দেশী তারাদের মাঝে!


অলিন্দ দেখে সব,আরও দেখা বাকি! নির্বাক,নিশ্চুপ সে....,নাম-'ত্রয়ী'!(অলিন্দ)