সহজ সরল ভাষায়, ছন্দে তালে এক সাধারণ আত্মাভিমানী খেটে খাওয়া মানুষের নিত্যদিনের জীবনসংগ্রাম ও তাঁর চাওয়া পাওয়ার গল্প বলেছেন কবি ইবনে মিজান "চাই না ভিক্ষের ঠোঙ্গা" রচনাটির মধ্যে দিয়ে l ভূমিহীন তিস্তাপাড়ের মানুষ l বাচ্চু মিঞা নাম l ভাড়ার অটোরিক্সা চালিয়ে খুব কষ্টে দিনানিপাত করেন l ছেলে কলেজে পড়ে l মেয়েটি বিবাহযোগ্যা l পাত্র খুঁজছেন মেয়ের জন্য l সামান্য আয় l এদিকে জিনিসপত্রের দাম নিত্য ঊর্ধ্বমুখী l সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়ছে দিনকে দিন l জিনিসের দাম বাড়ে, কিন্তু তাঁর আয় বাড়ে না l তারপর আবার বর্ষাকালে, প্রচন্ড শীতে কাজ বন্ধ হয়ে যায় l তখন বেঁচে থাকাই দায় হয়ে যায় l দুনিয়া জুড়ে জীবন এগিয়ে যায় l কিন্তু অর্থের কষ্টে তাঁর ক্ষেত্রে মনে হয় যেন জীবন থমকে আছে l বাচ্চু মিঞার চাহিদা বেশি নয় l তিনবেলা ডালভাতে বেঁচে থাকা - এটুকুই চাওয়া তাঁর l কোনো ধনরত্নের চাহিদা নেই l
দেশের ত্রাণমন্ত্রীর কাছে তাঁর নিবেদন, ত্রাণ নয়, ভিক্ষা নয়, হাতে কাজ চায় তাঁর মতো খেটে খাওয়া মানুষদের l সারা বছর কাজ চায় তাঁদের l কাজ করে নিজের উপার্জিত অর্থেই তাঁরা সংসার চালাতে চান l ভিক্ষা, দান বা দয়ার অর্থে নয় l কল্যাণকামী রাষ্ট্রের কাছে তাঁর আর একটি অনুরোধ হলো, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণ করা l ক্রমবর্ধমান মূল্য সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে l তাঁদের আয় সীমিত l ইচ্ছা করলেই তাঁরা নিজেদের আয় বাড়িয়ে নিতে পারেন না l ফলে জিনিসের দাম যখন হু হু করে বাড়ে, সাধারণ মানুষের বেঁচে থাকাটা কঠিন হয়ে পড়ে l বাচ্চু মিয়াঁর বিশ্বাস সরকার ইচ্ছা করলেই মূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারে l সেই বিশ্বাসের জায়গা থেকেই সাধারণ মানুষের জীবন যন্ত্রণা লাঘবের জন্য ত্রাণমন্ত্রীর কাছে তাঁর অনুরোধ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকার থেকে প্রযত্ন করা l আর সারা বছর তাঁরা যাতে কাজ পায় তার ব্যবস্থা করা l তাঁর মতো সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষদের স্বার্থে শতকাজে ব্যস্ত মন্ত্রীমশাইয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তিনি l নিজেদের জীবনের সুখ দুঃখের গল্প তুলে ধরেছেন l তাঁদের অসহায় অবস্থা বর্ণনা করেছেন l এবং মর্যাদার সঙ্গে সেই সমস্যার সমাধান সরকার করুক এই প্রার্থনা রেখেছেন l


কবিকে জানাই আন্তরিক শুভকামনা l