রূপক কবিতা l মৃতপ্রায় গাছ l গাছ কিসের রূপক ? গদ্যকবিতাটি রচিত হলো ২৫শে মার্চ l ২৬শে মার্চ এর প্রাক্কালে l ২৬শে মার্চ কবিতাটি আসরে প্রকাশিত হলো l ২৬শে মার্চ কি ? বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস l এই স্বাধীনতা এসেছে কিভাবে ? কবি বলছেন, "স্বযত্নে লাগানো ও ভালোবাসার স্পর্শে, রক্ত ঝরানো স্নেহ - ভালোবাসায়"
বুঝতে অসুবিধা হয় না "বড় একটি গাছ" বলতে কবি দেশের স্বাধীনতাকেই বুঝিয়েছেন l প্রতিটি মানুষের কাছে স্বাধীনতা বড়ো প্রিয়, বড়ো আকাঙ্খিত, "গাছের সু্স্বাদু ফলে তরতাজা ও পরিপুষ্ট বাঙ্গালীর প্রাণ"।
কিন্তু বহু সংগ্রাম, ত্যাগ ও বলিদানের মধ্যে দিয়ে যে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে, সেই স্বাধীনতাকে তার স্বমহিমায় ধরে রাখার বিষয়ে মানুষ সচেষ্ট নয় l কিছুসংখ্যক মানুষের স্বার্থপরতা, লোভ, হিংসা, দম্ভ - যাবতীয় মানবিক দুর্বলতা মানুষকে তার কর্তব্য থেকে বিচলিত করে রেখেছে l বৃহত্তর মানুষের স্বাধীনতা আজ লুণ্ঠিত l স্বাধীনতা বিপন্ন l
"স্বভাবগতভাবে স্বার্থপর বাঙ্গাল গাছটির ফল না পেয়ে ডালপালা কেটে বিক্রি করে, গাছটিকে নাঙ্গা করে দিলো।" স্বাধীনতা আজ মৃতপ্রায় l
"একটি গাছ আজ মৃতপ্রায়" কবিতায় কবি মোঃ আব্দুল হাফিজ দেশের বৃহত্তর মানুষের এই বেদনার কথাই মেলে ধরেছেন l
স্বাধীনতা বলতে এখন বুঝায় অধিকারবিহীন, নিরন্ন নাঙ্গা দরিদ্র মানুষজনের আর্ত হাহাকার "শুধুই লম্বা শাখাপ্রশাখা বিহীন একটি নাঙ্গা গাছ।"
বছরভর দুর্দশাক্লিষ্ট মানুষ দেখেন বিশেষ একটি দুটি দিনে, স্বাধীনতা দিবস, ভাষা দিবস বা বিজয় দিবসে দেশজুড়ে এক উত্সবের পরিবেশ রচনা করা হয়, সুসজ্জিত করা হয় চারিধার l হতদরিদ্র, অধিকারহীন মানুষজনকে হয়তো কিছু পরিমাণ ত্রাণ ইত্যাদি বিলি করে এই উত্সবে সামিল করার প্রয়াস হয় l হঠাৎ হঠাৎ এই আপ্যায়ন ও সেবাযত্ন দেশের সামগ্রিক হতাশা ও অধিকারহীনতার পরিবেশের কোনো মৌলিক পরিবর্তন ঘটায় না l বরং গরীব মানুষজন এই আকস্মিক আপ্যায়নের অত্যাচারে হয়তো অসুস্থ হয়ে পড়েন l এর মধ্যেও কিছু স্বার্থপর লোভী মানুষ নিজেদের স্বার্থ পূরণ করে চলেন l আপাত উপকার করার ছলে দেশের দশের অনেক বড়ো ক্ষতি করে ফেলেন l
এভাবে চলতে থাকলে দেশের স্বাধীনতা, মানুষের স্বাধীনতা প্রহসনে পরিণত হবে l এখনো সময় আছে l স্বাধীনতা পাওয়া গেছে l সেই স্বাধীনতাকে প্রকৃত অর্থে সার্থক করে তোলার জন্য সব শ্রেণীর মানুষকে উদ্যোগী হতে হবে l
সুন্দর কবিতার জন্য কবিকে জানাই শুভকামনা !!