প্রেম ভালোবাসার অনুভব এক স্বাভাবিক বিষয় l কিন্তু এই স্বাভাবিক অনুভবকে প্রকাশ করা হয় নানা কৌশলে l সাধারন যে বিষয়টি এখানে লক্ষ্য করা যায় তা হলো অতিকথন (Hyperbole) l নিজের ভালোবাসার জনকে আকৃষ্ট করার জন্য প্রেমিক মানুষেরা অতিকথনের আশ্রয় নেয় l এই অতিকথনের মধ্যে দিয়ে সে তার ভালোবাসার গভীরতা প্রকাশ করে l এমন সব অঙ্গীকার, প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়, সাধারন বুদ্ধিতে যার অনুমোদন মেলে না l কিন্তু প্রেম অন্ধ l যুক্তিবোধ এখানে কাজ করে না l প্রেম-ভালোবাসার রঙে যখন মনটা রঙীন হয়ে থাকে, তখন চারপাশের পৃথিবীটাকে এতো সুন্দর দেখায়, জীবন যাপনের মূল উপাদানগুলো সম্বন্ধে ধারনা অস্বচ্ছ হয়ে যায় l তখন কথায় চিড়া ভেজে l প্রেমিকাও কথার এই আতিশয্যে মোহিত হয় এবং তার প্রতি উদ্দিষ্ট এই অতিকথনকে তার প্রতি প্রেমিকের গভীর, নিবেদিতপ্রাণ ভালোবাসার প্রকাশ হিসাবেই গ্রহণ করে l
প্রেমিকার ঘন কালো কেশ অর্থাৎ চুলে মিশে যাবার কথা বলছে এক প্রেমিক l এক প্রেমিকার মাথায় কতটা চুল থাকা সম্ভব l একজন সাড়ে পাঁচ ফুট বা ছয় ফুট উচ্চতার পুরুষ প্রেমিক তার প্রেমিকার দুই ফুট দীর্ঘ চুলে কিভাবে আত্মগোপন করবে l কি করে সম্ভব এটা ?
এই প্রশ্ন করা যাবে না l করলে আপনি বেরসিক l প্রেম বোঝেন না l কথাটি প্রতীকি l এর মাধ্যমে একজন প্রেমিক প্রকাশ করছে তার ভালোবাসার গভীরতা l তার আন্তরিকতা l এভাবেই সে তার প্রেমিকার কালো নয়নযুগল, যা তার চোখে সাগরের সমান, সেখানে ডুব দেয় l একবার যদি প্রেমিকার জন্য ভালোবাসার অনুভব তার আসে, তাহলে তাকে সে হৃদয়মাঝে স্থাপন করবে এবং দিবসভর তার ধ্যানজ্ঞান করবে l ভালোবাসার জনের ডাকে সাড়া দিতে তার বিলম্ব হবে না l নানা কৌশলে রঙীন হৃদয়ে সে তার প্রেম নিবেদন করবে এবং প্রেমিকার ডাকে সাড়া দিয়ে তাকে আদর করবে, তাকে ভালোবাসবে l
তার প্রেমিকার কাছেও সে আশা করে তার এই সাচ্চা ভালবাসার সহাস্য স্বীকৃতি ও অনুমোদন l মুক্তার মতো হবে তার হাসি এবং তার প্রেম ঝর্ণার মতো তার প্রতি বর্ষিত হবে এই তার কামনা l
প্রেম বিষয়ক ছোট্ট কবিতা "শুধু তোমার-ই জন্যে" তে কবি  মহঃ সানারুল মোমিন এরকম এক প্রেমিকের মুখে তার প্রিয়জনের প্রতি ভালোবাসার যে গভীরতা, যে আন্তরিকতা তা উপস্থাপন করেছেন নানা অতিকথনের মধ্যে দিয়ে এবং বিনিময়ে প্রেমিকার কাছ থেকে তার যে প্রত্যাশা - সেটিও আছে l
ভালো একটি কবিতার জন্য কবিকে শুভেচ্ছা l