আশাহত প্রেম। উনিশটি বসন্ত ধরে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা সঞ্চয়। প্রেমের স্বার্থে অনেক ঝুঁকি নেওয়া, সাত সমুদ্র পার করা, রঙ্গমঞ্চে কতো অভিনয়, কতো বর্ণময় চরিত্রাভিনয়।
প্রেমের সাড়া পেতে মন এখন অধৈর্য হয়ে যায়। বয়ঃসন্ধির শেষ। মন এখন পরিণত। এতকাল প্রেমসাধনা, তার জন্য এত নিষ্ঠা, এত ত্যাগ, সবই বৃথা যায় দেখে মন বিষন্ন। এত সাধনা করেও শেষে প্রেমকে বন্দী করা সম্ভব হয় নি। ফিরে গেছে তার নিজের ভুবনে। নৈকট্যের দিন শেষ। যেন বহু দূরে চলে গেছে প্রেম। সুদূর থেকে সেই চেনা স্বর হৃদয় সাগরে ভেসে আসে। বিরহ বেদনা মনকে ভারাক্রান্ত করে তোলে।
অন্য কারও আদর ভালবাসায় প্রেমিকা ভুলে যায় তার প্রথম প্রেমকে। এই মনোবেদনা সহ্য করা কঠিন। মন বিবশ হয়ে যায়। উদাসী নয়ন সুদূরপানে চেয়ে থাকে।
প্রেমিকাকে নিজের ভালোবাসার জালে আবদ্ধ করবার জন্য প্রচেষ্টা কম হয় নি। ঘন কালো আকাশমাঝে শত শত তারা গোনা হয়েছে, সে শুধু প্রেমিকাকে খুশি করার জন্য। তারা গোনা এখানে কঠিন থেকে কঠিনতর কাজের রূপক। প্রেমিকার অবর্ণনীয় সৌন্দর্যকে, তার মনোহরণ রূপকে বাঁধবার চেষ্টা বিফল হয়েছে। তার কাছে আসা তার দিক থেকে ভালোবাসার রূপ নেয় নি।
কিন্ত প্রেমিকের হৃদয়ে সেই ভালবাসার অনুভব বিরাজমান, এটা জেনেও যে তার প্রেমিকার মনের কোনো কোণে তার কোনো স্থান নেই।
প্রেমে ব্যর্থ এই জীবন বহন করে চলা দুঃসহ। সুন্দর প্রাণের এই দেহ থেকে তাই মুক্তির কামনা, ছুটির আর্তি। বিরহবেদনা, প্রেমে ব্যর্থতার বোধ উনিশ বছর বয়সেই জীবন সায়াণ্হের অনুভব দেয়। নীরবে, সকলের অজান্তে, অন্তত প্রেমিকার অজান্তে  এই ব্যর্থ জীবনের অন্ত হোক, সাবলীল হৃদয়ে প্রেমিকের প্রার্থনা!
আশাহত প্রেম কাহিনী। "উনিশটি বসন্ত পারে" কবিতায় কবি সৈকত জানা মেলে ধরেছেন এক বিরহী প্রেমিকের মনোবেদনার কথা।
কবিকেশুভেচ্ছা।