(১৪ ই ফেব্রুয়ারি বিশ্ব জুড়ে ভ্যালেন্টাইনস ডে পালিত হয় l ভালবাসা দিবস তার আর এক নাম l এই দিবসটির বিশেষ ঐতিহাসিক গুরুত্ব আছে l মাধুর্য আছে l কিন্তু কতিপয় যুবক যুবতী এই মাধুর্য উপলব্ধি না করে দিনটির অমর্যাদা করে, প্রকৃত ভালবাসার অপমান করে এবং নিজেদেরও বিপদ ডেকে আনে l তাদের বিবেকবোধ জাগ্রত করার প্রয়াসেই এই রচনা l )


ভালোবাসায় মাখবি মলম
মলম মাখবি বিশেষ দিনে
ঐ বিষেতে বিঁধবি রাধা
জীবন জুড়ে কৃষ্ণ বিনে l


কলির কেষ্ট খায় তো মধু
দায় নিতে সে মাথা ঝাড়ে
যখন আপদ শরীর জুড়ে
কলির কেষ্ট পগার পাড়ে l


ভালোবাসার বিশেষ দিনে
জীবন নিয়ে মরণ খেলা l
পদস্খলন মরণ আনে
আপনজনের দুঃখবেলা l


** প্রাসঙ্গিক মনে করে "দৈনিক ইনকিলাব" এ ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ তারিখ প্রকাশিত "অপসংস্কৃতির সাথে ভালোবাসার সম্পর্ক থাকতে পারে না" লেখাটির নির্বাচিত অংশ উদ্ধৃত করলাম l


"বছর জুড়েই আমাদের দেশের রাজধানীসহ প্রায় প্রতিটি শহরের অসংখ্য পার্ক, প্রমোদ তরী, তামাশার ক্লাবে দেখা মেলে আমাদের তরুণ-তরুণীদের প্রেমের চিত্র। বিভিন্ন আবাসিক হোটেল থেকে আপত্তিকরভাবে গ্রেফতার হয় লায়লা-মজনুদের দল! ইউটিউবসহ দেশে-বিদেশের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেশের তরুণ-তরুণীদের কীর্তিকলাপ দেখলে লজ্জা হয়, ধিক্কার জাগে। আসন্ন ভালোবাসা দিবসে আমাদের ভালোবাসার পাল্লাটা একটু ভারি করার জন্য চেষ্টার ত্রুটি থাকবে না হয়তো! বছরের অন্যান্য দিনগুলোতেও যেহেতু ভালোবাসা থেমে থাকে না তাই ভালোবাসা নিয়ে এ বিশেষ দিনটিতে বিশেষ কিছু করতে না পারলে প্রেমিক-প্রেমিকাদের স্বার্থকতা কোথায়! ফলাফলে, নতুনভাবে সৃষ্টি হবে একদল বিপথগামী যুবক-যুবতী, ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার সাথে দূরত্ব সৃষ্টি হবে, খ্রিস্টান-নাসারাদের উদ্দেশ্য সফল হবে অর্থাৎ ইসলামী চেতনায় আঘাত আসবে, অনেকের মহামূল্যবান সতীত্ব বাজারে উঠবে, পিতৃ পরিচয়হীন সন্তান উৎপাদনের সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে ।
কথিত ভালোবাসা দিবস সম্পর্কিত জানা-অজানা অধ্যায় অবগত হওয়ার পরেও দেশি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যে লালিত কোন নারী-পুরুষ কি এই দিনে তার প্রিয়জন থেকে ভ্যালেন্টাইন্স ডে কার্ড, লাল গোলাপ কিংবা কোন উপঢৌকন প্রাপ্তির মানসে অধীর আগ্রহে ক্ষণ গুনবে? কিংবা সতীত্ব (এটা শুধু নারীর নয় পুরুষেরও রয়েছে) হারাবে জেনেও সে পথ মাড়াবে? এরপরেও কেউ যদি এ দিবসকে সামনে রেখে এমন কোন কাজ করে যা সামাজিক মূল্যবোধ, ধর্মীয় শৃঙ্খলা ভেঙ্গে যায় এবং মাতৃভূমির মাটি ও মানুষের সংস্কৃতি বিসর্জন দিয়ে উল্টো পথে হাঁটে তবে তার দায়ভার কার? একটু চিন্তা করলেই স্পষ্ট হবে, ভ্যালেন্টাইন্স দিবসের সাথে প্রকৃত ভালোবাসার কোন সম্পর্ক কোনকালেই ছিল না এবং আজও নেই। আমাদের ভালোবাসা নির্দিষ্ট একদিনের কয়েক ঘণ্টার ফ্রেমে সীমাবদ্ধ নয় বরং সারা বছরের, গোটা জীবনের। আবেগের ওপরে বিবেককে প্রাধান্য দিতে না পারলে আমরা কিসের শ্রেষ্ঠত্বের দাবিদার? নব প্রজন্মকে সুস্থ-সংস্কৃতির চর্চায় মগ্ন করতে চাইলে কথিত ভালোবাসা দিবসের মতো যতগুলো ক্ষতিকর উৎসব প্রচলিত রয়েছে তা থেকে আমাদের বিরত থাকার শপথ নিতে হবে। যতদ্রুত আমরা সত্য ও বাস্তবতা অনুধাবন করতে পারব, মঙ্গল-কল্যাণ ততদ্রুত আমাদের দ্বারে উপস্থিত হবে। তখন প্রকৃত ভালোবাসায় ভরে উঠবে আমাদের জীবন, গোটা দেশ।"
 লেখক : কলামিস্ট)