প্রতিটি মানুষের একটি সত্তা থাকে
প্রকৃতির কোনো রূপের সঙ্গে সমন্বিত l
প্রাকৃতিক শক্তি হোক কিংবা কোনো প্রাণী,
মানব অস্তিত্ব, তার কর্মের সঙ্গে
তার নিবিড় যোগ থাকে l
ভেতরে বাইরে তার প্রভাবে মানব নিয়ন্ত্রিত হয়
গুটিয়ে যায় আবার বিকশিত হয় l
এক সুতো বেঁধে রাখে, খুলে দেয়
ঢিল দেয় আবার কখনও বজ্র আঁটুনি l


নিজের নামের অতিরিক্ত একটি নাম
সারা শিশুকাল বয়ে বেড়িয়েছি l
স্বভাবগুণ বা জীবন ঘিরে কোনো ঘটনা -
অনেক মনন থেকে হয়েছে এই নামকরণ l
শুনেছি - আমার 'হালুম' নামকরণ হয়েছিল
কারণ, আমি নাকি খুব চিৎকার করতাম l
এই চিৎকারটা কি ?
- আমার অভিব্যক্তি ? আমার প্রকাশ ?
আর যারা রসিকতা করে
আমার এই নাম নিয়ে আমাকে রাগাতে চাইত
তাদের ধরে, কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে
সশব্দে চিৎকার করতাম - হালুম !


তারপর বহু বহু বছর কাটল l
পাওয়া নামটা হারালাম l
অব্যবহারে জীর্ণ হল তার মাহাত্ম্য l
তারপর এলো দুই হাজার সতের সালের
দোসরা জানুয়ারির সকাল l
বাঘ তো আসে নি, যেন এসেছে আমার প্রতিরূপ,
আমার আসল সত্তা, আমার শিশুকালের উপার্জন l
ফিরে পেলাম রোমান্টিকতা, আবেগ
সৃজনশীল সত্তাকে l


ব্যাঘ্র-সত্তা বস্তুটি কি ?
সোজা সাপটা কথা বলা, মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো l
সত্যের সঙ্গে চলা l ছল চাতুরি না করা l
কাউকে অকারণ ভয় না পাওয়া l


বাঘের সঙ্গে আমার অন্তরাত্মার মিল ছাড়াও,
এর অন্য অর্থও তো আসে l
রায়গঞ্জে বাঘের আবির্ভাব ততটাই অস্বাভাবিক
যতটা একজন সাধারনের মধ্যে অসাধারনের l
প্রথমটা যদি হতে পারে
তবে দ্বিতীয়টা নয় কেন ?
বাঘের সঙ্গে জন্ম থেকেই এত নিকটজনের সম্পর্ক
সেই বাঘমামা এলো দরজায় l
আর যায় কোথা !
সব ভাব একেবারে ঠোঁটের ডগায় l


প্রকৃতির কোনো রূপ, কোনো জীব -
তার সঙ্গে মানবের নাড়ির যোগ থাকে