কেন জানি বার বার প্রেষণা অনুভূত হচ্ছিল মনের মধ্যে আলোচনার পেইজে কিছু লিখার। তাই চেষ্টা করছি মাত্র। তবে অবশ্যই বলে রাখতে চাই এটা কোন সমালোচনা বা অভিযোগ নয়। এটি কেবলই আমার মনের গভীরে ভাসমান কিছু ভাবনার প্রয়াস মাত্র।


পরন্ত শীতে ঝরে যাওয়া শুকনো ডালে যেমনি বসন্তের প্রারম্ভে নতুন কচি পাতার জন্ম নেয় আর পৃথিবীর সৌন্দর্যকে ভরিয়ে দেয় তেমনি আমার মনে নতুন নতুন আশা জাগ্রত হচ্ছিল ২০১৮ সালের ২০ ফেব্রুয়ারী কবি সম্মিলনকে ঘিরে।


আর যখন সেই প্রত্যাশিত দিনের সোনালী সুর্য উদয় হল পূর্বাকাশে তখন মনের গভীরে পাল তোলা নৌকা বসন্ত বাতাসে কেবলই দোল খেয়ে যাচ্ছিল। সকল কাজ একদিকে ফেলে রেখে সকাল ৮টার মধ‌্যে বেরিয়ে পরলাম উত্তরার বাসা থেকে।


বাস নামক স্থল জাহাজে চড়ে জ্যামের যমকে ঠেলতে ঠেলতে অবশেষে ৩ ঘন্টা পর উপস্থিত হলাম সেই প্রত্যাশিত কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে কবি সম্মিলনে। মন ভরে গেল। প্রাণ ভরে যেন নিঃশ্বাস নিলাম। তিন ঘন্টার বিরক্তিকর জ‌্যাম আর ক্লান্তি কোথায় যেন উড়ে গেল মুহূর্তে। ১১টার একটু পরই অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গেল। মন্ত্র মুগ্ধের মতো সব যেন আস্বাদন করছিলাম হৃদয় দিয়ে। প্রধান অতিথি ও অন্যান্য কবিদের পদচারণায় কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তান যেন বেশ আনন্দমুখর ও প্রানবন্ত হয়ে উঠল। সবার প্রিয় শ্রদ্ধেয় এডমিন কিছু কিছু বিষয় তুলে ধরলেন এই বাংলা কবিতা ডটকমের আসর সমন্ধে।


প্রধান অতিথি গীতকবি ও কবি মোহাম্মদ রফিকউজ্জামানের গুরুগম্ভীর কন্ঠে কিছু কথা এবং সেই সাথে অন্যান্য কবিদের সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে মন যেন আরও বেশি উৎফল্ল হয়ে উঠল।  


বেশি ভাল লাগা বা আনন্দমুখর সময় গুলো যেন তীরের বেগে ছুটে চলে চোখের সামনে দিয়ে। আর সেটাই ঘটল। উপস্থাপক কবি মহোদয় ঘোষনা করলেন আমাদের হাতে আর বেশী সময় নেই অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার। আচমকা ধাক্কা খেলাম নিরব মনে। তবুও যা সত্য তাই মেনে নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে চলা।


স্বরচিত কবিতা আবৃত্তির সময় এক্কেবারেই কম তাই মনে কোণে আশা নিরাশার ঝড় বইছিল কেবলই। তবুও ২৯ জনের তালিকায় নাম প্রথমে থাকার কারণে সুযোগ পেলাম স্বরচিত কবিতা আবৃত্তির। তাই মন ভরে নিঃশ্বাস নিলাম।


দেখতে দেখতে সময় ঘন্টা দেখিয়ে দিল তার আপন কৃর্তি। তবে বলতে চাই প্রথমেই অনুষ্ঠান হলে ঢুকার পর থেকেই সব কবিদের চেহারা গুলি খুব আপন মনে হচ্ছিল বিশেষ করে যাদের প্রফাইলে ছবি সংযুক্ত করা ছিল তাদের। যাদের সাথে প্রতিদিন মনে মনে মন্তব্য আদান প্রদানের মধ্যদিয়ে একটি আত্নিক সম্পর্কের মেলবন্ধন তৈরী হয়েছে সেই প্রিয় ব্যক্তিদের এত কাছে পেয়েও চোখে মুখে কোন ভাব বিনিময় কিংবা হাই হ্যালোও বলতে পারিনি। এর জন্য অবশ্যই ক্ষমা চাইছি।


তবে এসবের পিছনে মূল কারণ ছিল একটাই বই মেলায় অংশগ্রহণের তীব্র আকাঙ্খা। আর সেই লোভ সামলাতে অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার সাথে সাথে দ্রুত চলে গেলাম বই মেলার উদ্দেশ্যে। তবে সবচেয়ে মজার বিষয় ছিল আমাকে অনেকে পুরুষ কবিই মনে করতেন। অনেকে আবার আবার দাদা বলে মন্তব্য লেখেন পেইজে। যাই হোক অনেক কথা লিখে ফেললাম।


আসলে যেই প্রেষণা আমাকে বার বার তাড়িত করছিল আলােচনা পেইজে লিখার তা হল এই অনুষ্ঠানটি এটাই প্রথম কবি সম্মিলন আমার ধারনা। এখানে যারা এই অনুষ্ঠান পরিচালনা করছিলেন আমার মনে হয় প্রত্যেকেই তাদের নিজ নিজ কর্ম প্রতিষ্ঠানে যথাযোগ্য এবং যিনি নিজ প্রচেষ্টায় এই অনুষ্ঠানকে আরও বেশী আন্তরিক ও সাফলামন্ডিত করে তুলেছেন নিজ অর্থ, সময় ও শ্রম দিয়ে সেই প্রিয়এডমিন ও সহযোগী ও সকল কবিদের জানাই প্রাণঢালা অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা।


আরও ধন্যবাদ দিতে চাই অপূর্ব সুন্দর ডাইরী ও কলমের জন্য। সাথে হট কফি, নাস্তা ও বেশ সুস্বাদু ফলের আয়োজনের জন্য।


তবে সবশেষে সবার উদ্দেশে বলতে চাই সবকিছুরই দুটা দিক থাকে ভাল এবং মন্দ। আসুন সবাই ভালটাই জীবন ভান্ডারে সচ্ঞয় করি যতটা পারি। তাহলেই জীবন হবে স্বার্থক। তবে এটাও সত্য সমালোচনা না থাকলে ভিত্তি মজবুত হয়না। গোলাপ ফুল রূপে রঙে অপূর্ব মোহনীয়। তার আবার কাঁটাও আছে।


আগামী দিনে সোনালী সুর্য উদয় হোক এই মহান কবি সম্মিলনকে ঘিরে সবার সম্মিলিত সহযোগিতায় এই প্রত্যাশা রাখি। ধন্যবাদ