ফেরি,
অনেকদিন তো হলো তোর সাথে আমার আড়ি।তুই তো
আর আগ বাড়িয়ে আসবি না,তাই নিমন্ত্রন পত্র পাঠালাম।
এই চিঠি দ্বৈত দ্বায়িত্ব পালন করছে।একই সঙ্গে পুরনো বন্ধুত্ব
ঝালাই,এবং নেমন্তন্ন।তুই এসে বেড়িয়ে যা ।এখানে এসে
আমার হাড় মাংশ চিবিয়ে খেয়ে ভেতরের রাগ প্রশমিত কর।


সমুদ্র তীরে অল্প কদিন হল বানিয়েছি আমার ঘর। জায়গাটা
সরকারি।বিশাল সৈকতে আমার অযাচিত ভাবে নির্মাণ করা
ঘড় কারো নজরেই পড়েনি।শুধু একজন কিভাবে যেন পেয়েছিল
খবর,তার উচ্ছ্বসিত উল্লাস দেখে আমি নতুন করে স্বপ্ন দেখছিলাম।
তবে এরই মধ্যে ঘরের চালা উড়ে গেছে ঝড়ে।বৃষ্টি হলে যতটা
না বাইরে তার চেয়ে ঢের বেশি ভেতরে।আমি এখন ঘরের
ভেতরেই বৃষ্টি স্নান সেরে নেই।জ্যোৎস্নাও অকৃপণ বৃষ্টির মতো।


এখন আমি আর স্বপ্ন দেখি না,রাতের বেলা ঘুমের ঘোরেও
জ্যোৎস্না দেখি। হঠাৎ হঠাৎ বৃষ্টির তোড়ে ঘুম ভেঙ্গে গেলে সেটুকুও
পালায় মেঘের আড়ালে।তখন কাকভেজা হয়ে অপেক্ষা কখন
চাঁদ হেসে উঠবে মেঘ কাটিয়ে।কিন্তু মেঘ তো আর আমার ইচ্ছে তে
চলে না,তাই নিয়তির কাছে আত্মসমর্পণ করা ছাড়া আর কোন
উপায় থাকে না। অথচ এই বিষয় টাতে আমার প্রচণ্ড ঘেন্না।


এত জায়গা থাকতে আমি কেন ঝঞ্ঝা শঙ্কুল সমুদ্রের কাছাকাছি?
আসলে ফিরতে চেয়েছিলাম সমুদ্র কন্যার কাছে, কবিতার রাজত্বে,
শুনেছি ওখানে নিত্য আনাগোনা কথামালার,ঐ লোভেই আমি
অপটু সাতারু পৃথিবী সেরা গভীর জলরাশির কাছাকাছি।কিন্তু
ঘরের আর সব আসবাব পত্রের পাশাপাশি কবিতার খাতাও ভিজে
মণ্ড।দু’দিন আগে ময়লা ওয়ালা সব পরিষ্কার করে দিয়ে গেছে।


এখন সব পরিছন্ন,ফিটফাট।তুই আসলে শোবার জায়গার
সমস্যা ছাড়া আপাতত অন্য কোন সমস্যা নেই।দু’বন্ধু মিলে
সৈকতেই কাটাবো না হয় রাতের সময় টুকু।দিনের বেলায় আমি
সৈকতের বালিতে লিখবো কবিতা,আর তুই ঢেউ আটকাবি।


তোর কাব্য।