এই সিঁড়িটি যখন দেখি-
মেঘলা দুপুর বিষন্নতার আকাশ নামে,
অঝোর ধারার বৃষ্টি ঝরে নয়ন কোল।
মধুমতির জলের ধারা ছুটে চলে দু'নয়নে সঙ্গোপনে;
অসীম ব্যথার কৌতূহলে ছুটে চলে, ছুটে চলে, ছুটে চলে।
তখন আমার মন কেঁদে যায়,
তখন আমার মন ছুটে যায় পাগলা ঘোড়ার জিনে চড়ে
তেপান্তরের মাঠ পেরিয়ে কৌরবদের জতুগৃহে।
যেথায় পঞ্চপাণ্ডব ভ্রাতা দুর্যোধন আর দুঃশাসনের
কূটিল ষড়যন্ত্রের শিকার;
নৃশংসতায় পুড়ে যাবার কুন্তিসহ দৌপদী আর
নকুল, সহদেব, অর্জুন, ভীম, যুধিষ্ঠির।


এই সিঁড়িটি যখন দেখি-
কাব্যকথার লালিত্যময় শব্দরাজি স্তব্ধ হয়ে
         শোকের মাতম উথলে ওঠে।
যেন নিঠুর কারবালায় হোসেন শহীদ ইয়াজিদের সিমার-হাতে।
তখন বনে ফুল হাসে না করপুটে সুবাস নিয়ে,
জল বহে না শাওন মাসের ভরা গাঙে।  
তখন আমার বুকের ভেতর প্রতিহিংসার অগ্নি জ্বলে,
ভীষণ রকম তীব্রদহন দগ্ধ ব্যথায় উঠে ফুলে।
প্রতিশোধের যন্ত্রণাতে কাতর হয়ে অসুরনাশী শক্তি যোগায়।
তখন আমার ঋজু হৃদয়
স্বপ্ন ভাঙার বেদনাতে প্রতিদিনই শাণিত হয়;
ক্ষোভে আমর শরীর কাঁপে, চেতনাতে বারুদ জ্বলে।
শপথ করি প্রতিশোধের যাঁতাকলে শাস্তি দিতে
হত্যাকারী এবং তাদের দোসর যতো;
       ধ্বংস করার কঠিন শপথ মনের ভেতর জেগে ওঠে।


বত্রিশের এই সিঁড়িটি যখন দেখি-
উর্ধ্বমূখী বিশ্বাসেরা প্রদীপ্ততায় জ্বলে ওঠে।
বাঁধভাঙা জল বল্গাহারা দ্রুতলয়ে উজান ছোটে;
মাঠ-ঘাট-পথ, জনপদের ভেতর দিয়ে
বিশ্বাসের অস্ত্র হাতে।
অবিশ্বাসীর বিশ্বাসেতে তীব্র আঘাত হানার তরে।
তখন আমার বুকের মাঝে উদ্যত হয়
গুলিস্তানের মীর জুমলার বিশাল কামান,
জ্বালামূখী আদর্শেরই দীপ্ত চেতন।
সত্য-ন্যায়ের লগি দিয়ে, বৈঠা দিয়ে ঠেঁসেঠুঁসে বারুদ ভরি।
হৃদয় ঘসে তখন জ্বালাই তীব্র অগ্নিশিখার কণা।
কামান দাগাই, কামান দগাই, কামান দাগাই...
মানুষরূপী অমানুষের বুকের দিকে;
ভেঙে দিতে দুর্বৃত্তের ছল-চাতুরীর শক্ত পাঁজর, কামান দাগাই।


এখন আমার বুকের ভেতর এই সিঁড়িটি স্বপ্ন বোনে;
স্বপ্ন বোনে উন্নয়নের সড়ক ধরে এগিয়ে যেতে;
পিতার বুকের রক্তধারায় সিক্ত হয়ে শপথ নিতে;
ভালোবাসার চাদর দিয়ে ঢেকে দিতে
বাংলাদেশের সবুজ-শ্যামল মৃত্তিকাকে
          এবং সকল স্বপ্নকাতর মানুষ-হৃদয়।


২৫/০৮/২০২৩
ঢাকা।