তোমাকে দেখেছিলাম দীপ্তিময় মিছিলের অগ্রভাগে
ঘর্মসিক্ত সাদা পাঞ্জাবির দুরন্ত যুবক!
শ্লোগানে শ্লোগানে মূখরিত করে তুলেছিলে
মুক্তিকামী মানুষের পুঞ্জিভূত বেদনার কথা;
তাহাদের নিরাশার ভেতরে জাগালে আশার দৃঢ়তা;
অতঃপর, এভাবেই হয়ে গেলে জাতির অমর নেতা।
তোমাকে দেখেছিলাম এই রেসকোর্স-ময়দানে
সাত মার্চের বিকেলে সেই উত্তাল জনসমুদ্রে
দৃপ্ত তর্জনি উচিয়ে, অমিত নির্ঘোষ কণ্ঠে উচ্চারিলে
জনসংগ্রামের কথা, চিরমুক্তির বিশ্বাসে;
মানুষের শৃঙ্খল ভাঙার স্বাধীনতার কথা!
তারপর, ইতিহাস হলো পৃথিবীর মানচিত্রে।
অবিশ্বাস্য রণাঙ্গনে ত্রিশ লক্ষ প্রাণ
লজ্জায় ঘোমটা টানা দুই লক্ষ নারীর সম্মান
পুড়ে যাওয়া ঘর-বাড়ি, ফসলের মাঠ
নিপীড়িত কোটি মানুষের
পরদেশে উদ্বাস্ত কঠিন জীবন-যাপন শেষে
রক্তের সাগর পাড়ি দিয়ে; অতঃপর, এলো স্বাধীনতা!
একটি পতাকা যেন দুরন্ত বিশ্বাস
পাখা মেলে উড়ে যায় মুক্তির নিঃশ্বাসে
আশার সাম্পানে তুলে দিলে তুমি বিশ্বাসের ঝাড়বাতি।
যখন চলেছি ছুটে আগামীর আলোকোজ্জ্বিত পথে
আলোর মাস্তুলে বিজয়ের পাল তুলে
তখনি যে তারা- পরাজিত নৃশংস শত্রুরা
তীক্ষ্ম নখরের আঘাতের পর আঘাত হানিয়া
তছনছ করে দিলো তোমার স্বপ্নের পথরেখা।
নিহত হলেন পিতা! আমাদের চিরযুবক নাবিক
টলায়মান স্বদেশ পিছনের দিকে যাত্রা করে
অসুর-সাঙ্গপাঙ্গেরা দোষারোপ করে তোমার উপরে!
লুটেপুটে খেলো তারা জাতির ইজ্জত এবং সম্মান।


বহুদিন কেটে গেলো
যেনো ফিনিক্সের রক্তে উৎসারিত তোমার তনয়া
সাহসিকা দুরন্ত বালিকা ভাঙ্গা হাল ধরে দৃঢ় হাতে
ছুটে চলে আলোর উদ্দেশ্যে, জাতির লক্ষ্যাভিমূখে
তোমার দেখানো পথে।
অন্ধকার ভেদ করে শুরু হয় দুরূহ পথেই চলা
আলোর সূর্যকে তুলে আনার বিশাল কর্মযজ্ঞ নিয়ে।
বাংলাদেশ এখন এগিয়ে যাচ্ছে ঊর্ধ্বগামী পথে
তোমার কাঙ্ক্ষিত বন্দরের পানে।


ঘুমোও, বাংলার কাদামাটির দুরন্ত ছেলে!
ঘুমোও, টুঙ্গীপাড়ার মাটিতে তুমি ঘুমোও;
আমরা থাকবো জেগে তোমার স্বপ্নের অধ্যাদেশ নিয়ে।


০৫/০৭/২০২২
মিরপুর, ঢাকা।