এখনো নিঝুম রাতে পাখিরা যখন
ঘুমিয়ে পড়ে ক্লান্তিতে; আমি জেগে রই
একা, স্মৃতির দর্পণে খুঁজি আঁতিপাঁতি,
সুখের চিত্রসমূহ; পরিস্ফুটভাবে
দাঁড়ায় সম্মুখে। হায়! বেদনারা আসে,
ঝাঁপিঢালা খুলে দেয়; আমি সারারাত
জেগে থাকি আর বেদনার তারা গুনি!


সেদিন ছিলো পূর্ণিমা, আমরা দুজন,
ঘন জ্যোৎস্নার জলে পাশাপাশি বসে,
অবারিত কথামালা, বাহারি শব্দের
কতো যে আশার কথা! কতো ভালোবাসা,
আমাদের জীবনের বিবর্ণতা ফুঁড়ে
আকুলতা ঝরেছিলো; উষ্ঠের তরঙ্গে
কতো অনাবিল সুখ! স্বর্গের দুয়ার
খুলে মর্ত্যে নেমেছিলো অপরূপ ছবি।
চাঁদের প্রদীপ জ্বেলে, নেমেছিলো বুঝি
কিশোর কালের লালপরী, নীলপরী।


ধীরে ধীরে ম্লান হয় চাঁদের সুষমা,
রক্তিমবর্ণের আভা পূবের আকাশে
জেগে উঠে ক্রমান্বয়ে; ঘুমহীন রাত্রির
ক্লান্তি মুছে দিলে; হায়! কোথায় সেদিন?
আরতো পাবো না ফিরে, এই জীবনের
কারুময় পৃথিবীতে। তাই, হাহাকার
জাগে হৃদয়ের তলে ঘোর বেদনায়।
যখন একাকী থাকি নিজের ভেতরে;
স্বপ্নের চাদরে ঢাকা মানবিক ছবি,
মাঝেমাঝে খুলে দেখি, রঙবিবর্ণ সব
ছবি; তুমিময় আমি- অন্য রকমের
স্পষ্ট ছবির আঁকর। স্মৃতি জাগানিয়া
কষ্টের প্যাণ্ডোরা খুলে দাও সুনিপুণ
ভঙ্গিমায়; হৃদয়ের মাঝে জেগে ওঠে
অপ্রাপ্তির শিহরণ, তীব্র ব্যাকুলতা,
বোধহীন সরলতা। স্মৃতিরা যতোই
সুখের হোক না কেন, দুঃখবাহী তারা;
খুঁড়ে খুঁড়ে সঞ্চয়ন করে দুঃখবোধ।


১৭/১১/২০১৭
মিরপুর, ঢাকা।