যখন জন্মেছি আমি, অঙ্কুরিত হয়েছিলো বীজ
মুখরিত পৃথিবীতে। তখন ভীষণ অন্ধকার
নেমেছিলো ভীরু পায়ে এ বাংলার শহরে-পল্লীতে।
গ্রামের করুণাময়ী দাত্রীর কোমল হাত থেকে
মায়ের কোলেতে নামি; যেন অন্ধকারের খনিজ।
জন্মেছি বাংলায় আমি, অঙ্কুরিত হয়েছিলো বীজ।


খুশিতে উদ্বেল আমার মা, আনন্দের অশ্রু চোখে
তাঁর, জীবন্ত স্পন্দন। অন্ধকার, স্যাৎস্যাতে ঘর;
অপেক্ষারত পাশের কক্ষে প্রিয় আত্মীয়স্বজন!
ধূপ-ধুনার অনন্য গন্ধ চারিদিকে ভেসে যায়,
শান্তির নিঃশ্বাস ছাড়ে চিন্তাকুল পিতা অতিসুখে;
আনন্দাশ্রু খুশবো ছড়ায় মায়ের আশার বুকে।


আমার বান্ধব হলো, পাহাড় সাগর নদী ঢেউ
চাঁদ বন লতাপাতা। কাঙ্ক্ষিত শব্দের আরশিতে
দৃষ্টিভঙ্গী ভেসে ওঠে, দোলে ওঠে জীবনের কথা।
পাখিদের অনুগ্রহে দুলে যায় গাছের সবুজ
আনন্দ-হুল্লোড় ভাসে চারিদিকে; বুঝলো না কেউ!
পাশে আমার বন্ধুরা-  পাহাড় সাগর নদী ঢেউ।


আমার জীবন্ত দেহ ক্রমে ক্রমে হয় ভারাক্রান্ত,
চিন্তা-চেতনা বিবাদী। পুঞ্জিভূত মেঘরাশি কাঁদে
মাটির পরশ লাগি'; উর্ধ্বমূখে আমিও যে কাঁদি।
কোমল মেঘের মতো, ফিরে আসি সন্তানের কাছে,
ক্রমশ একাকী হই, মনে হয়, আমি উদভ্রান্ত;
আমার জীবন্ত দেহ ক্রমে ক্রমে হয় ভারাক্রান্ত।


প্রকৃতির দরবারে চাই যোগ্য শব্দ উচ্চারণ
হোক অমিত ঝংকারে। অবিরাম অনিয়ম করে
শব্দ-হাতুড়ি চালাই মানুষের জগতসংসারে;
শব্দগুলো যেন প্রাণ নিয়ে, হয় জাগ্রত, জীবন্ত,
চরম আঘাতে ভাঙে দুর্বত্তের শোষণ-শাসন;
রক্তের আকরে সিক্ত সে শব্দকে করি অন্বেষণ।


০৭/০৬/২০২২
মিরপুর, ঢাকা।