মরালীর মতো গ্রীবাখানি বাঁকায়ে, প্রশ্ন করলো সে,
- ‘তোমার প্রেমিকা আছে না কি ?’
বিশুষ্ক বদনে আনত নয়নে বিনীত উচ্চারণ, শব্দ-শ্রমিক বলে,
- ‘আমি একদিন এক ঈশ্বরীকে দেখেছিলেম, তোমার রূপের ভেতর,
যে এসেছিলো অদৃশ্যমানতার কোন স্বর্গলোক থেকে;
যার ঠিকানা অলৌকিক মেরুপ্রভার উজ্জ্বলতম কোন দেশে;
পথ দেখালো আমারে সে চোখের ইশারায়;
দীর্ঘতর অন্ধকার সুড়ঙ্গের শেষ সীমানা- অদ্ভুুত স্ফটিক আলোর দিকে;
আজও চলেছি সেই পথে সম্মোহিত প্রাণে, তার আহ্বানে।
তাই, কোন ঈশ্বরীকে খুঁজতে যাই না আর।’


- ‘ আমার রূপ! আমার রূপে খুঁজে পেয়েছো তুমি, ঈশ্বরীর প্রতিচ্ছবি?’


মাথা নিচু করা বিনীত প্রজার মতো, উর্ধ্বপানে তুলেছি দুই হাত,
- ‘প্রেম দাও তুমি, দাও করুণাহীন ভালোবাসা।
দেখেছি জলের প্রপাতে, জলের আঘাতে
কঠিন পাষাণ ক্ষয়ে ক্ষয়ে লীন হয়ে যায় জলাঙ্গী জলে,
অথচ, আমার অশ্রুর ঘাতে একটুখানিও টললো না তোমার হৃদয়।
এতোই নিঠুর তুমি! এতোটাই কী নিদয়!!
শব্দ-প্রেমিক ছিলেম; তুমিই করেছো আমায় শব্দ-শ্রমিক।
তাই, লীলার মাঝেই বেঁচে থাকি অনন্তকাল অবলীলায়
তোমারই নামে, তোমারই ধ্যানে, হে ঈশ্বরী!


(তারপর, ক্ষাণিক চুপ করে থেকে শব্দ-শ্রমিক
আদ্রকণ্ঠের ক্ষীণস্বরে বিগলিত নয়নে বলে,)


‘দু'হাত বাড়ায়ে বললে না  তুমি, হে কবি!
আমি তোমারই, আমার যা কিছু আছে, তোমার সবই।’


- ‘ছায়াতুর প্রাণ ধূসর মরুতে বপন করে প্রেম-মহীরুহের বীজ,
অপেক্ষায় আছি সুশীতল ছায়ার প্রত্যাশায়।'
এই কথা শোনার পর হাই তুলতে তুলতে আমার ঈশ্বরী চলে যায়,
- ‘বড্ডো ঘুম পেয়েছে, এবার চলি, এই নিশুতি বেলায়।’


২৬/১০/২০১৬
মিরপুর, ঢাকা।