প্রবাসীরা শত ক্ষত নিয়ে বুকে টাকা বানানোর মেশিনের মতো বিদেশ-বিভূঁয়ে কাজ করে যায়।
তাঁদের সে ব্যথা, মরমের কথা, করুণ কাহিনী কেউতো শোনে না; বসে নিরিবিলি সমবেদনায়।
অন্য সকলে বলে যে কামলা! অপবাদ দেয় করে অবহেলা; অপমানকর নিঠুর কথায়।
সুযোগ পেলেই ঘৃণা করে যায়, যথায় তথায় ছোট করে দেখে কথায় কথায়; মরি বেদনায়।
ভুলে যায় সবে মানুষ হিসেবে সকলের মতো চাই ভালোবাসা, দরদী কোমল সোহাগী কথায়।
প্রবাসী সকলে সোনা বয়ে আনে দেশের জন্য; সোনার মানুষ পৃথিবীর বুকে ঘর্ম ঝরায়।
দেশে ছেলে-মেয়ে, ভাই-বোন, বাবা, আত্মীয়জন,  দরদী জননী; যখন তখন শুধু টাকা চায়।
সুখে, না অসুখে? ভাবে না কেহ যে, নিয়তিকে মেনে জীবন চালাই; দ্রুত চলমান এই দুনিযায়।
নীরব আঁধারে প্রবাসীরা কাঁদে, একেলা নিঝুম রাত্রির কালে, গহীন নিশিতে; খুব নিরালায়।
প্রবাসী জীবন অভিশাপসম জীবনের প্রতি পরতে পরতে কষ্ট-দোলায় দোল খেয়ে যায়।
মা-কে যদি বলি- ''মাগো, বড় সাধ জাগে দেখিবারে; চলে আসি বাড়ি? প্রবাস জীবন ভাল্লাগে না আর''।
করুণ জননী চোখ মুছে কয়- ''সব ছেড়েছুঁড়ে বাড়ি চলে এলে, কিভাবে চালাবো এই সংসার''!
বাবাও যে দেন, একই জবাব! ভিন্নতা নেই কারোর কথায়; জোঁট বেঁধে সবে শুধু টাকা চায়।
প্রিয়জন প্রিয় ঘরের রমণী তেজিস্বরে বলে- ''বাড়ি চলে এলে, খাবে কোথা থেকে? থাকবে কোথায়?
আরো বেশি করে টাকা আনো ঘরে; টাকা ছাড়া এই দুনিয়ার মাঝে, মানুষ সমাজে কোন দাম নাই''।
সকলের মতে থাকি কোনমতে, সারা দিনমান কাজ করে যাই; শ্রম বেচি আর করছি কামাই।
মরু-রোদে পুড়ি, বৃষ্টিতে ভিজি; আধাপেটা খেয়ে অথবা না খেয়ে, মরু-জঙ্গলে কাজ করি নিতি।
সকলের তরে করে যাই কাজ, আমরা প্রবাসী, দেশের কামলা! সার-সংক্ষেপে এই পরিচিতি।


১৯/০৮/২০২৩
মিরপুর, ঢাকা।