পুরুষোত্তম মহানায়ক তুমি জাতির জনক
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান! মুক্তচিত্তে
তোমায় স্মরণ করি আজ চিত্তবিনম্র শ্রদ্ধায়।
অমর মার্চের সাত; রেসকোর্স ময়দানে এসে
দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে উত্তাল ঊর্মিল সমুদ্রের
তরঙ্গভঙ্গফেনিচ্ছলের মাঠে, প্রদীপ্ত জীবন
তুচ্ছজ্ঞান করে জনসভায় হাজির হয়েছিলে।
বাঙালির বঞ্চনার, চির-দূঃখের ইতিহাসের
অমোঘ সত্যকে শব্দের তুলিতে এঁকে দিয়েছিলে
জনতার কাছে। রক্তে রঞ্জিত রাজপথের কথা
নিপীড়িত মানুষের করুণ অত্যাচারের কথা
বাংলার তেইশ বছরের দুর্বিসহ ইতিহাস;
উপস্থিত মানুষের চেতন-আর্শিতে চলমান
ছায়াছবিরূপে তুলে এনেছিলে কী অবলীলায়!
ভুলোমনা বাঙালির ভুলে যাওয়া সে-ই ইতিহাস
সাদাকালো শব্দের আকরে তুলে দিলে বাঙালির
চেতনায়। বায়ান্নের চেতনার ভাষা আন্দোলন
চুয়ান্নের যুক্তফ্রণ্ট নির্বাচন, আটান্ন সালের
জংলী আইয়ুবের মার্শাল ল'; ছিষট্টির ছয় দফা-
আমাদের অস্তিত্বের রক্তময় স্মারক সময়!
কী অবলীলায় বলে গেলে তুমি দৃপ্ত উচ্চারণে-
'আমি প্রধানমন্ত্রীত্ব চাই না। আমার দেশের
মানুষের অধিকার চাই'। প্রজাবান্ধব রাজার
আদেশের ন্যায় এক ফরমান জারি করে দিলে
বাংলার রাজা- 'কোর্ট-কাচারি আদালত-ফৌজদারী,
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে।
বন্ধ থাকবে, সেক্রেটারিয়েট, সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্ট,
জজকোর্ট, সেমি-গভর্নমেণ্ট দপ্তর, ওয়াপদা...'।
দেশব্যাপি সর্বত্মক হরতাল দিলে। সাধারণ
মানুষের যাতে কষ্ট কম হয়, বলে দিলে তুমি-
'রিকশা, গরুর গাড়ি, রেল চলবে, লঞ্চ চলবে'।
জনসভায় তোমার কথা অলঙ্ঘনীয় আইন!
নরমে গরম হয়ে বলেছিলে দীপ্ত উচ্চারণে-
'তোমরা আমার ভাই, তোমরা ব্যারাকে থাকো; আর
আমাদের বুকের উপর গুলি চালাবার চেষ্টা
করিও না, সাতকোটি মানুষকে দাবায়ে রাখতে
পারবা না। যখন মরতে শিখেছি তখন কেউ
আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবে না'। তেজঃদীপ্ত
বাঙালির মননে রোপন করে দিলে অবিরাম
তীব্র অসহযোগের ভয়হীন সংগ্রামের বীজ!
চেতনায় তুলে দিলে স্বাধীনতার, মুক্তির স্বপ্ন।
দ্ব্যর্থহীন বজ্রকণ্ঠে উচ্চারণ করেছিলে তুমি-
'প্রত্যেক শহরে, গ্রামে, মহল্লায়, এবং সর্বত্র
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সংগ্রাম পরিষদ
গড়ে তোলার। তাদের  যা-কিছু আছে, তাই নিয়ে
শত্রুর মোকাবেলায়  প্রস্তুত থাকার। এ দেশের
মানুষকে মুক্ত করার আপোসহীন অঙ্গীকারে,
'ইনশাআল্লাহ' বলে দৃঢ় কণ্ঠে ঘোষণা করলে -
'এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম
এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। জয় বাংলা'!


জয় বাংলা- দীপ্র প্রেরণার শত্রুবিধ্বংসী শ্লোগান।


২৫/০৭/২০২২
মিরপুর, ঢাকা।