আগমন ক্ষনে হাসিল বিধাতা-কি ছিল তাহার মনে
কাঁদিয়া আকুল হইল শিশুটি কী বুঝিল সে-ই জানে!
স্বর্গ হইতে দেবদূত আসি' আশীষ করিয়া গেল
যতন করিলে তাহার প্রতিভা ছড়াবে জগতে আলো।
বিধাতা তাহারে গড়িয়াছে নিজে সকল মাধুরী দিয়া
চাঁদের উপমা মিছে তার কাছে আপনার রূপে অদ্বিতীয়া।


জননী তাহারে আদর করিয়া ডাকে জাহানের আলো
বুকের গহীনে প্রদীপ জ্বালিয়া রজনী দিবসগুলো।
জননীর সাথে হাসিয়া খেলিয়া কাটায় সারাটি বেলা
আদর-সোহাগ মান-অভিমান সদা খুনসুটি খেলা।
দিন চলে যায়-খুকু বড় হয়-যেতে হবে স্কুলে
তাহাকে ছাড়িয়া একা ঘরে মা কেমন করিয়া রবে!


সারারাত ধরে ছটফট করে-নিদ নাহি তার চোখে
সকাল হইলে যাবে পাঠশালে-কত সুখ বাজে বুকে!
রাত সরে যায়- ভোরের আলোয় ভূবন হাসিয়া গলে
'ওঠো খুকু ওঠো' ডাকিলো জননী 'যেতে হবে স্কুলে'!
মুদিত নয়নে ধরিয়া আঁচলে খুকু ডাকে মৃদু স্বরে
বড় তৃষ্ণা মাগো পানি দাও মোরে শরীর কেমন করে।


দেখিলেন মাতা ক্লান্ত দূহিতা কাঁপিছে জ্বরের ঘোরে
কোন্ অজানা শন্কা ঘিরিয়া মন যে কেমন করে।
দিবস গড়ায় রজনী পেরোয় সপ্তাহ মাস ঘুরে
মায়ের ক্রোড়ে বসিয়া খুকু পথ্য সেবন করে।
কর্কট ব্যাধি ছোট্ট শরীরে বাঁধিয়াছে বাসা ভারি
জীবন প্রদীপ নিভিতে তাহার নাহি বেশি আর দেরি।


নিভু নিভু দীপে বসি' নতমুখে জননীর ক্রন্দন
শুনিল না ত্রাতা কেড়ে নিল বৃথা মায়ের বুকের ধন।
জন্মের কালে ভ্রান্তির ছলে বিধাতা কি শাপ দিলে
ললাটের লেখা যায় না'ক মোছা কস্মিনও কালে।
লইবে যদি তাহাকে কাড়িয়া জননীর ক্রোড় হ'তে
কেন মিছে তারে পাঠালে জগতে গড়িয়া আপন হাতে!


ঝরিয়া সরিয়া গেছে কী যে তার মানে
কে তারে ফিরায়ে আনে এই ধরাধামে!