আমি একদিন বাড়ি ছেড়ে চলে যাবো
না এটা কিশোর বয়েসের অভিমানে নয়
সাতাশ বছর বয়েসে ছেলেমানুষী করে না কেউ
এই বয়েসে চকলেট কিম্বা লাল বলের স্বপ্ন দ্যাখা না
দ্যাখে নদী কিম্বা পাহার
প্রেমিকার মুখ অথবা বাবার অবসর


কিন্তু আমি স্বপ্ন দেখি
দেখি আমেরিকায় থাকা প্রেমিকা
আমার সমস্ত ভালো লাগার মানুষ, আমার অস্তিত্ব
তার ডিভোর্সটা হয়ে গ্যালেই আমরা বিয়ে কোরবো
না সংসার কোরে রোজ রাতে চোদার জন্য নয়


কিন্তু এসব কিছুই হচ্ছে না
কিছুই পাচ্ছি না মন মতো
তাই ভাবছি বাড়ি থেকে পালিয়ে যাবো
কিন্তু পালিয়ে থাকবো কোথায়? খাবো কি?
এই যে ঘুম থেকে উঠে, এই সন্ধ্যা ছটায়-
আমি বাড়ি ছেড়ে যাবার কথা ভাবছি
অথচ পেটে প্রচণ্ড জ্বালা
যেনো স্বয়ং সুকান্ত
ঢুকে পড়েছেন নাড়িভুঁড়িতে


পালাবার কথা সবার মাথায় থাকে
এমনটা সবাই ভাবে
মুক্তি চায়, চায় সমস্ত অপ্রাপ্তির অবসান
অথচ মুক্তি সেতো থাকে নিজেরই ভেতরে


মুক্তির কথা ভাবতে ভাবতে-
নিজেকে বিপ্লবীও মনে হতেই পারে
মনে হতে পারে লড়াকু যোদ্ধা
বিশ্ববিজয়ী কোনো বীর


সত্য বিপ্লবে সনসময় অটল থকতে হয়
আর মিথ্যে বিপ্লব ভণ্ডুল হয়ে যায় যেকোনো সময়
এই কথা গুলো পড়ে-
আপনারা আমাকে বিপ্লবী ভাবতে পারেন
কিন্তু দেখুন আমার খিদে পাচ্ছে
তিনদিন ধরে ভাত খাইনি
এইগুলো পড়ে আপনারা ভাবছেন কবিতা কোরছি
আমার সত্য গুলোলোকে আপনারা ভাবছেন শব্দের প্যাঁচ


তবে বাড়ি ছেড়ে চলেই যাবো একদিন
অথবা মরে যবো
আপনারা আমার মৃত্যুকে বোলবেন "আত্মহত্যা"
আমার ছবি আর হাতে মোমবাতি নিয়ে-
পালন কোরবেন আড়াই দিনের শোক
যদিও এগুলো অনুমান মাত্র


কিন্তু সত্যিই একদিন মরতে পারলে আমি মনে মনে হাসবো
হায়রে বোকাচোদার দল তোরাইতো খুন কোরলি আমাকে
পাশে না দাঁড়িয়ে, কাঁধে হাত না রেখে
প্রচণ্ড অবহেলা আর নিদারুণ অযত্নে


আপনারা এখনো ভাবছেন আমি কবিতা লিখছি
আমার বাবাও হয়তো তাই ভাবছেন
কিন্তু বাবা এবং আপনারা জানেন না-
আমার প্রেমিকার ফোনে কল দিলে
ক্রস কানেশনে যখন শোনা যায় সঙ্গমের শব্দ
শোনা যায় চরম শীৎকার আর উন্মত্ত চুম্বন
এইসব শুনে আমি অবুঝ শিশুর মতো হয়ে যাই
যে শিশুকে খিচুরির বদল গু দিলেও খেয়ে ফেলবে
মাথা ঠুকতে থাকি ঈশ্বরের ঘরে
বিশ্বাসী আমি ধরতে চাই তার অদৃশ্য পা
প্রার্থনায় বোলতে চাই-
হায় ঈশ্বর এসবই মিথ্যে হয় যেনো সব মিথ্যে হয়
আমি যেনো ভুল শুনি বধির শিল্পীর মতো


আমার ফেটে যাওয়া ভেতরটা নিয়ে
আমি যখন রাস্তায় হাঁটি
নির্বোধ ভিড়ের ভেতর দিয়ে
উদ্ভ্রান্ত পাগলের মতো
অসংলগ্নতার ভেতর স্বাভাবিক থাকার চেষ্টায়
আমি এসব কথা বিড়বিড় কোরে আওড়াই
আপনারা ভেবে বসেন কবিতা পড়ছি আমি


না এ কোনো কবিতা নয়
অসভ্য কোনো মানুষের আর্তনাদ
প্রেমিকার সভ্য বাবারা যা কানে নেন না
ছাপা হয় না কোনো পত্রিকায়
তাছাড়া এইসব কথা-
"আমার বাংলা বই" প্রথম ভাগ থেকে মাধ্যমিক
কোথাও লেখা নেই
পাঠ্যবইয়ে জীবনের গল্প থাকে না কখনো
থাকে মুখস্ত কোরবার জন্য কবির জন্ম এবং মৃত্যুর তারিখ


আমি চাইছি এইসব পড়ে আপনারা কেউ আসুন
সোয়েব ভাই বা সাম্যদা কিম্বা পুষ্পভাই
পাশে বসে কাঁধ এগিয়ে দিক আমার দিকে
আমি কাঁদবো


আমি কাঁদতে চাই
লাশকাটা ঘরে শুয়ে থাকা জীবনবাবুর মতো
আর আমার চোখ মুছে দিক কার্তিকের চাঁদ
ঘরে প্রতিধ্বনিত হয়ে থাক
সমস্ত ক্ষুধা


আমি কাঁদতে চাই শব্দের ভেতর
একজন বেশ্যার নাঙ ফালগুনী রায়ের মতো
পেছনে বাজতে থাকুক রবীন্দ্রনাথ
আর ব্যান্ডমাস্টার তুষার রায় নির্দেশনায়
বাজিয়েরা অর্কেস্ট্রা বাজাক বিষাদের সুরে


আমি রুদ্রের হাত থেকে সিগারেট নিয়ে
একটানে কেঁদে ফেলতে চাই গোটা জীবন
কিন্তু আপনারা বুঝবেন না কিছুই
বরং আমার কান্না শুনে
আপনারা ভাববেন আমি কবিতা লিখছি।