ছায়াটাকে আমি কখনোই ছাড়াতে পারিনা
যতক্ষণ জেগে থাকি আলোর ভিতর
কিংবা অন্ধকারে  
সামনে পিছনে চারিদিকে-যেদিকেই তাকাই
তার উপস্থিতি
হয়তো হিমেল হয়তো উষ্ণ
লাঙলের ফলার মতো চষতে থাকে
চিঁড়ে ফেড়ে রক্তাক্ত করে আমায়
আমার কষ্ট হয়
তবুও ভাললাগে
তবুও বারবার রক্তাক্ত হয়ে উঠতে ভাললাগে
কেমন অদ্ভুত ভাললাগা-
কোন কোন কষ্টকে ভালবাসে মানুষ


ছায়াটাকে কখনোই ছাড়াতে পারিনা আমি
কখনো সামনে থেকে
যেন দড়ি দিয়ে বেঁধে টেনে নিয়ে যায় আমাকে
কখনো পেছনে
পেছন থেকে আমাকে তাড়িয়ে বেড়ায়
আমি উদ্ভ্রান্তের মতো সহসা থেমে পড়ি পথের মাঝে
ইচ্ছে করে গড়ে তুলি প্রাচীর
ইচ্ছে করে টেনে দিই সীমানা
মনে হয় পা বুঝি আর চলে না-
তবুও থেমে পড়া হয় না  
ছায়ার ভিতর যেন এক বাউড়ী বাতাস
আমাকে স্থির হতে দ্যায় না
কি জানি হয়তো আমিও স্থির হতে চাইনা
ঘুরে ঘুরে মরে মরে ছায়ার ভিতর
একটুখানি নিভাঁজ শান্তির জন্যে কাঙাল হই
কাঙাল হতে কখনো কখনো ভীষণ তৃষ্ণা জাগে


সব আলো নিভে এলে
ছায়াটা তার শরীর মেলে দ্যায় সবটুকু আকাশজুড়ে
আকাশ হারিয়ে যায়
ছায়াটা আমায় জাপটে ধরে
নিয়ে যায় আরও ঘন ছায়ার প্রান্তরে-দীঘল দীঘল ছায়া
আমি ছুঁয়ে দেখতে চাই ছায়ার শরীর-ছুতে পারিনা
আমি পেরিয়ে যেতে চাই ছায়ার শরীর-পেরোতে পারিনা
ক্রমাগত ডুবে যাই ছায়ার ভিতর
ক্রমাগত ছুটে যাই ছায়ার ভিতর
জ্বলে যাই ঝরে যাই বারবার
অতঃপর জেগে উঠি পোড়ামাংসের ঘ্রাণে
কিছু দীর্ঘশ্বাস কিছু গ্লানি জমে-ঝরে পড়ে ঝরে যায়


তবুও ছায়াটা আমি আঁকড়ে থাকি
তবুও ছায়ার ভিতর আমার অনন্ত বসবাস
_________________________________
কামাল
ঢাকা, ২২ মে ১৯৯৩