তুমি কবি না হয়ে ভালোই করেছো।
কবি হবার অনেক যন্ত্রণা।
কবির চোখে সমুদ্রের জল,
বুকের তটে আছড়ে পড়ে বেদনার ঢেউ,
কবির ভিটেমাটি খামচায় বানের শকুন।
কবির মাথায় অসহ্য যন্ত্রণা ভীর করে,
কবি গরম তেলে পাকুড়াভাজা হয়
আর নিজের কবর খুড়ে বসে থাকে নিজেই।
কবি পেয়ে হারায় আর না পাওয়ার যন্ত্রণায়
রাতগুলোকে জেগে থেকে যন্ত্রণা দেয়।
তুমি কবি হওনি ভালোই হয়েছে,
নইলে সকালের সোনারোদ যখন
বাতায়ন পথে বসে থাকত তোমার প্রতিক্ষায়,
অথচ বাড়িওয়ালার কঠোর নিষেধ
তোমায় অন্ধকার বিছানায় আটকে রাখবে
তখন কী অসহ্য আক্রোশে তুমি
খামচে ধরতে বিছানার চাদর।
তুমি কবি হওনি ভালোই আছো।
ধরো মাঠের সর্ষেফুলের হলুদে আপ্লুদ তুমি
শিশিরলজ্জা ভেঙে ঘরছো ফুলেল মাঠে
আর তরুন মৌমাছিরা তোমায় গান শোনাচ্ছে
ঠিক তখনই এল চাষির ধারালো কাস্তে
ফুলেল মাঠে আকল ধুষার ক্ষত
বলো তোমার সে ক্ষতশুকাতো কতদিনে
তোমার কবি হয়ে কাজ নেই,
তাহলে আর বড় জামগাছটার ডালে
যে হলুদ পাখিটা রোজ এস বসে
আর মাঝে মাঝে শোনায় কুটুম সংবাদ
তার বুকে শিকারির বুলেটের আঘাত
শুণ্যে ভাসমান রক্তাক্ত হলুদ পালক
শেষ চিৎকারের পর ছাই গাদায় পতন,
তোমাকে সারা বিকেল বালিশে মুখ গুজে কাঁদাবে না।
তুমি কবি হয়ে কি করবে বল?
বড় হলে ওরা যখন তোমায়
অনেকগুলো মিথ্যে শিখিয়ে দেবে
বলতে গিয়ে তোমার জিভ বার হয়ে যাবে আর
রুদ্ধ হয়ে আসবে শ্বাস প্রশ্বাস।
থাক কাজ নেই তোমার কবি হয়ে
তার চেয়ে এই বেশ ভালো আছো
সকালে জানলার ওপাশে তরুণ আলোকে
বাইওে রেখেই অন্ধকার বিছানায় ঘুমাবে,
মাঠে সর্ষেকাটার উৎসব দেখবে
হুলদ পাখিটার রোস্ট খেয়ে বিকেলে
অসংখ্য মিথ্যের ঘোড়া ছোটাবে মুখে।
কাজ নেই তোমার কবি হয়ে।
কবির বুকে অসহ্য বেদনার ভীর
কবির কলম চঞ্চল অস্থির।