রাত্রির শিশিরে একাকী স্নানরত শেফালিকা,
শুকনো ডালের গৌরব হয়ে ফুটে আছো খুব।
খেয়াল কী আছে-
কাল সকালেই হবে ভেজা ঘাসের শয্যায় আশ্রয়।
তাতে কী? ফুটেছি এই তো গৌরবের,
ওই রুপালি চাঁদও ডুবে যাবে মাঝরাতে।
কিন্তু চাঁদ যে কাল উঠবে আবার
আকাশের কোল জুড়ে ছড়াবে এমনি রুপালি জোৎস্না
তোমার অমন জাফরান বোটা আর
মুগ্ধতা ছড়ানো শুভ্র পাপড়িপঞ্চ তখন
কঠোর সূর্যশাসনে চুপসে ম্রিয়মান হয়ে
চুপসে পড়ে রবে ধুলোময় আঙিনায়।
ঝরে যাবার জন্মই যে জনম শেফালির।
তাই বলে ভেবোনা বৃথা গেল-
জাফরান বোটায় ভোরের আলোয় এই ফুটে ওঠা।
আজকের রাতে সমস্ত হীরন্ময় শিশির,
সব চন্দ্রালোক আর রাত্রির অপুর্ব নিস্তব্ধতায়
কেবল আমিই সুন্দরের আখ্যানলিপি।
পৃথিবীর কেন্দ্রবিন্দু আমি-
আমিই সব পিপাসু চাতকের অমৃতসুধা
ঘ্রানশোভিত বাতাসের আকর আমি
আমি এক শুকনো ডালের শেষ জীবনীশক্তির প্রকাশ।
শুধু মনে রেখো আমি ফুটিছিলাম-
ভোরের আলোয় তোমাদের পৃথিবীকে ভরিয়ে দিতে।
আছে কোনো শেষ ইচ্ছে কিংবা
ঝরবার আগে পৃথিবীর জন্য আক্ষেপ?
কাল ভেজা ঘাসের বুকে ঝরে যাবার সময়
কুড়িয়ে নিও পথিক যত্ন করে
মালা গেথে পরিয়ে দিও মোরে প্রিয়ার খোপায়
ভালোবাসা হয়েই না হয়-
মিশে রবো তোমাদের স্মৃতির রেণুকণায়।