বাইরের মা , ভিতরের মা
মাগো! কাল ছিল তো পুষি ম্যাওটা,
এই খানেতে ই বসে!
আজ পুষি টা গেল কোথায়;
দ্যাখ্ না হেথা এসে।
মা-গো , এখানেই কাল তো ছিল-
একটা শালিখ ; দুটো তার ছানা।
কোথায় তারা গেল চলে!
তারা কি আসবে না?
মাগো---, দেখে যা তোর;
টবের গাছখানা!
একটা ফুল তো ছিলই ফুটে,
আজ কেন দেখছি না?
হাজার কথা খোকার ঠোঁটে;
ফুটছে সর্বখন।
মাঝে মাঝে মা হয় উদাস!
বুক করে টন্ টন্!
হু হু করে বাড়ছে খোকা-
বুদ্ধি ও বেশ পাকা।
আজ যা আছে থাকবে তো কাল!
কেবল ডাকা হাঁকা।
বড়ো হতেই জ্ঞানী খোকা,
বিদেশ চলে গেল!
বসে মা ভাবে খোকার কথা;
সব সত্যি হল!
বাড়ির বাইরে রাখলেই পা-
পড়সীরা সব বলে--
দারুন ছেলে; তোমার ছেলে!
এ-ম-ন ক-টা মেলে?
বাইরের মা মুচকি হাসে,
গর্বে বাড়ে বুক।
ভিতরের মা নিজেই জ্বলে;
প্রাণ করে ধুক ধুক!
কাল যা ছিল হাতের কাছে;
আজ সে অনেক দূরে!
খোকার কথা ই সত্যি হল;
খোকা বুঝেছে অনেক আগেই, মা বুঝল পরে।
কাল যা ছিল ,
আজ কেন নেই ; ভাবছে মা বসে।
ভিতরের মা জ্বলে পুড়েছে--
বাইরের মা লোক দেখানি; বাইরে কেবল হাসে!
খোকা এখন বিদেশ ছেলে;
মায়ের ছেলে নয়।
বাইরের মা মুচকি হাসে---
ভিতরের মা ক্ষয়!
সোনা চাষি, বোগা তাঁতি;
পাশের বাড়ি থাকে।
তাদের ছেলে অল্প পড়া;
বাবা মাকেই দেখে।
ভিতরের মা, বাইরের মা!
একটাই মা আছে ওদের পাশে,
বিদেশ ছেলের মায়েরা সব-
ভিতরের মা কাঁদে শুধু, বাইরের মা হাসে!
ডলার পাঠাই বিদেশ ছেলে,
ব্যান্কে জমে টাকা।
পড়সীরা সব হিংসে করে-
মা এর মন ফাঁ-কা!
মায়ের ছেলে আজ হেথা নেই,
জ্ঞানী ছেলে, আছে বিদেশে;
ভিতরের মা শেষ হয়েছে-
বাইরের মা হাসে!
*** **** **** ***