## আরো একটা যৌবনকালের কবিতা##


ভোরের পাখি উঠছে জেগে, করছে কলরব-
দূর হলো ওই কুজ্ঝটিকার জীর্ণ আবির্ভাব।
ঘুম ভেঙেছে, উঠছে জেগে নওজোয়ানের দল-
রাঙা অরুণ উঠছে হেঁসে, বইছে নদীর জল।
খরস্রোতা সেই তটিনী ছুটছে কলকল,
তারই বক্ষে নায় ভাসাল ব্যস্ত মাঝির দল।
চিত্তে নিয়ে রুদ্র নেশা ছুটল যারা শূন্যে
এই ধরণীর অন্ধকার আজ দীপ্ত তাদের জন্যে।
রক্ষক যারা ভক্ষক হয়ে জগত মাঝে ওস্তাদ
ক্ষণজন্মা অর্বাচীনে শঙ্কিত তারা অধঃপাত!


শহরতলির বদ্ধ নীড়ে দগ্ধ মানব-ভৃত্য
মুক্ত মাঠের মুক্ত হাওয়ায় ভরছে আত্মচিত্ত।
নিপীড়িত- প্রবঞ্চিত দুর্বলেরা দিচ্ছে ডাক-
'কালনাগিনী শোষক তবে সিন্ধুতলে তলিয়ে যাক'।
দুরন্ত গতি মত্ত মতি ক্ষিপ্ত তাজী দুর্নিবার,
লম্ফ দিয়ে পার হলো ওই তপ্ত মরুর বালুচর।
দুঃসাহসী অভিযাত্রীর মরণমুখি যাত্রায়
শঙ্কিত ওই কাপুরুষও মর্ত্য ছাড়ার সাহস পায়।
ঝঞ্চাবাতে ঘূর্ণিপাকে ভ্রান্ত মাঝিমাল্লা
আজ ক্ষিপ্ত চিতে দুর্বিপাকে লড়ছে দেখি পাল্লা।


বজ্রাহত ছিল যত আচমকিত নর
আজ বজ্রালোতেই পথ খুঁজে সে করল নিশি পার।
আজ দীপ্ত দিনে তৃপ্ত মনে গাইছে মাঝি গীত-
আজ ঊর্মি যত দাঁড় আঘাতে শান্ত, অস্ফীত।
স্নিগ্ধ অনিল ওই যে সুনীল দিগন্ত চুমে ধায়,
কাজল কানাই জলদ ছুটে গহীন শূণ্যতায়।
নবীন অরুণ মারছে ছুঁড়ে তীব্র অগ্নিবাণ-
স্বার্থপর ধনীর ধরা ওষ্ঠাগত প্রাণ
নিয়ে আবছা চোখে দেখছে মরণনিশি,
হাতছানিতে ডাকছে তারে- স্পন্দিত পেশী
থর কাঁপছে অবিরাম যেমতি পত্র থরথর
কেঁপে কালবোশেখে ছিন্ন, ছারখার,
জীর্ণ, এ যে উম্মোচিত উচ্চ শিরধারী-
আজি মূঢ় মস্তকে নিত্যদিনে অন্ন পরিহারি!


   --রচনা, আনুমানিক ১৯৯৯