জাফলং এর ওই কালো পাহাড় কালো মেঘের পানে
এমন করে চেয়েছিল কোন মিলনের টানে!
মেঘের মাঝে লুকিয়ে ছিল কোমল জলকণা-
পাহাড় তাই বুঝি আনমনা।
মেঘের সাথে পাহাড়গুলোর এমন চেনা জানা
কি যে ভালো লাগতেছিল কেমন করে বলি।
এসো, জাফলং এ চলি।
চরণ ছুঁয়ে ছুটেছিল মুকুরপরা জল,
জলের নীচে জেগেছিল পাথরবাঁধা তল,
নৌকা ঠেলে ঠেলে
পাথর ধরে জেলে,
পাথর হাতে পাথুরে ওই জেলের রঙ্গমুখ-
ভরিয়ে দেই বুক।
জীবনতরী ভারী ভারী পাথর দিয়ে বোনা,
তবু দুঃখের সাথে রঙ্গমুখের এমন লেনাদেনা-
কি যে ভালো লাগতেছিল কেমন করে বলি।
এসো, জাফলং এ চলি।
পাহাড় বেয়ে ঝরেছিল এমন ছলছল
কোন দুখিনীর নয়নভরা জল!
কিসের ব্যথা পাথর হয়ে জমাট বাঁধে বুকে-
যুগান্তরের সাক্ষী হয়ে পাথর কাঁদে শোকে!
আজন্ম দুই তীরে দেখি রাজ্যের আচার-
ধরার উপর মার্তণ্ডের করুণ ব্যভিচার।
রাজ্যজুড়ে দেখেছি কত হিংসা হানাহানি,
বস্ত্রহীনের বস্ত্র নিয়ে কুত্তার টানাটানি।
আজন্ম এই সভ্য জাতির অসভ্যতার তরে
কত ধিক্কার জমে আছে আজ তোমার অন্তঃপুরে!
অনন্ত এই খরধারা নয়নজলে ভরা-
জীবনের বিষাদগুলো হলো বাঁধনহারা।
কাতর হয়ে অধম হয়ে লুটায় নতশির-
আপনার মাঝে কেমন লাগে অস্থির!
এ কোন অপরাধবোধ
মহতীসমুখে আমায় করেছে অবোধ-
মানব হয়ে মানবতার করিনি সাধনা,
আজীবন স্বীয় স্বার্থ করি আরাধনা
বুঝেছি মানবজাতি জগতের পর
বড় স্বার্থপর!
আজ যা কিছু আমার আমি দিব জলাঞ্জলি-
এসো, জাফলং এ চলি।
-- রচনা, আনুমানিক ২০০৬।