কুহেলির আবছায়া, ছাওয়া চারিধার
দেখিবার সাধ, তবু- শুধু একবার
‘সকালের গাঁ-খানি থাকে কেমনে-
‘যৌবনশেষি’ এই ‘ফাগুনি আসনে’ !
তাই চলি-, দেখিবারে, শুনিবারে আশা
বুকখানি করিবারে চিরতরে খাসা- ।
মুখে ফেলে বাসি পুলি করিয়া আহার
ধীরে ধীরে ঘর হতে- হইনু বাহার ।
চলিনু, সোজাসুজি- মাটি’লার পথে,
মোরগের ডাক শুনি, প্রথমা আ’রথে- ।
সকালে, নানান পাখির শুনি কলতান
যেন তারা শাখা হতে- করিল আহ্বান  ।
চারিধারে আরো কুহু-, ডাকিছে কোকিল,
বুঝি, -এল ‘ঋতুরাজ’, ভরিল অখিল  ।
রাঙা হয়ে শাখা ভার বকুলের কুলে,
চারিদিকে ছেয়ে আরো আম্র-মুকুলে  ।
বাগানের- যত কলি ফুটিল শাখে,
‘কতগুলা বালিকা- আঁচলেতে ঢাকে’ ।
গুন গুন সুরে এল মৌমাছি কত ,
মধু লাগি ‘ফুল-ফুলে’, হইল রত ।
কোনো এক গৃহবধূ-, হাম্বার ডাকে-
খড় নিয়ে গেল চলে, গোয়ালেরি বাঁকে ।
কত’কটা গাঁ ঘরে- প্রদীপের আলো
তা দেখি- মনে সব মুছিনু কালো  ।
কিছু দূরে দেখিনু ছোটোদের দল
মড়-মড় শব্দতে, আম্রের ফল-
কুঁড়িয়া নিয়া গেল ঘরেরি দ্বারে,
দাঁড়িয়া দেখিনু সবই, আমি ওইপারে ।
এই দেখে মনটা যে গেল সেই কালে
যেন আরো আছে বাকি, এই মোর ভালে ।
প্রভুরে বলিনু আমি, সেথা ওই তীরে-
আর এক জনমেতে পাই যেন ফিরে  ।
মনটা গেল বেশ- আবেশের ছলে
যাক্-গে ! ফেলে সব ফের গেনু চলে ।
ধীরে ধীরে যখনি- গেনু গভীরে
আকাশেতে তখনি দেখিনু রবি’রে ।
দেখিনু আরো শত- শিশিরেরি কণা,
তাতে পড়িয়া কিরণ-, লাগিছে সোনা ।
মুগ্ধ হইনু, দেখিয়া-, এমন সিনা
হইবেনা কেন এ যে, “ফাগুনি মাহিনা”!