১৯৯৩ থেকে ১৯৯৬ সাল! পুরোপুরি মনে আসছে না সঠিক সময়"। রঙিণ টিভির জগত, এমনকি স্যাটেলাইট মহাজগতে পা রাখা সত্বেও আমাদের গ্রাম বাংলায় রেডিওর ( বাংলাদেশ বেতার) জনপ্রিয়তা ছিল অনেক। সে সময়েরই কথা!


চৈত্রের এক আগুনঝরা সন্ধ্যা। দক্ষিণাকাশে যেন আগুন লেগেছে। মাগরিবের কিছু সময় পার হয়েছে। এক সময় চারদিক থেকে তুমুল চিত্কার, হৈ চৈ আর কাঁসা, টিন বা ঢোলের শব্দ! মুরুব্বীরা বলছে প্রবল তুফান আসছে, ঘর ভাঙ্গা ঝড়। মানুষ নাকি ঝড়ের ভুত তাড়াচ্ছে? সবার মনে মৃত্যুর ছায়া। ( যারা ঝড়ের তান্ডব সম্পর্কে জানে)। আমাদের মত ছোট্ট ছোট্ট ছেলে-মেয়েদের চৌকির নিচে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমার এক বেয়াই (বয়স্ক) সকল দ্বিধা ঝেরে আমার সাথে গুটিয়ে আছে, আর থর থর করে কাঁপছে। বাইরে শুধু মানুষের শব্দ, যান্ত্রিক ধ্বনি! হালকা বাতাস থাকলে, মানুষের ভয়ের চেয়ে কম। এক সময় তিনি বললেন, ঘরে রেডিও আছে?
কেন?
আজ শনিবার!
ও মানিক চান্দের কিসসা?
আমরা সবাই চৌকির নিচে বসে রেডিওতে ভয় আর আতঙ্কের মাঝেও (যদিও সেদিন কোনো ঝড় আসে নি, ঝঁঝাবুড়ি পালিয়েছে) বাংলাদেশ বেতারের বিশেষ ধারাবাহিক নাটক শুনছি)


তো সেই নাটকের (পুঁথি পাঠের আকারে) আজিজুল হাকিমের পুঁথি পাঠ গ্রাম বাংলায় খুবই জনপ্রিয় ছিল। যারা তখন শুনেছিলেন তারা আমার সাথে একমত হবেন। খুবই ছোটকালে দেখতাম পাশের পাড়ায় সন্ধার পর পুঁথি পাঠের আসর জমাত কামলারা। আমাদের বাড়িতেও বিষাদ সিন্ধুর পাশাপাশি অনেক পুঁথির পান্ডুলিপি ছিল! এর মাঝে একটা আমাকে খুবই আকৃষ্ট করেছিল " গহরের পরছা"। তারপর আকস্মিকই যেন এসব পুঁথি হারিয়ে গেলো!


হয়তো আবারো ফিরে আসবে পুঁথির যুগ! যেমন এখন থ্রিডি( 3D)যুগেও এফ এম রেডিওর দৌরাত্ম্য দেখা যায়...............