রুমমেটকে বললাম, ইদানিং আপনাকে ভাবীর সাথে কথা বলতে দেখছি না
ব্যাপারটা কী? শুধু মায়ের সাথে কথা বলতে দেখি
আগে তো আপনার মায়ের সাথে কখনো কথা বলতে দেখি নি?
ঘুম থেকে ওঠে, কাজে যেতে যেতে
কাজ ফিরতে, ঘুমাতে যাবার সময়
শুধু বউয়ের সাথে কথা আর কথা!
নাকি ইদানিং লোকান্তরালে করা শুরু করছেন? ভালো...
গোপন বিষয় গোপনে বলাই ভালো।
কক্ষবাসীকে দেখলাম কিছুটা আনমনা
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন, আপনার ভাবী মারা গেছেন!
কী বলেন? কবে? কী করে হলো?
-তিনমাস আগে, ক্যানসারে।
নিজেকে খুবই ধিক্কার দিতে লাগলাম, অপরাধী মনে হলো
আশ্চর্য হলাম তার মৌনতায়, যো লোকটা ছিল প্রাণচঞ্চল প্রগল্ভ
অথচ,একটা রুমে থেকেও কিছুই জানতে পারলাম না
জিগ্যেস করলাম, মেয়েটা এখন কার কাছে থাকে?
আমার মার কাছে। জানতাম মেয়েটার বয়স চার।
এতো ছোট্ট মানুষটার জন্য খুবই কষ্ট লাগল
সারাদিন কাটল ঐ চিন্তায়, শোকাবহ অনুভূতিতে
যেখানে যাই, যা কিছু করি, সারাক্ষণই এই কষ্টটা আর
আমার অপরাধী বোধটা এসে যায়।
রাতে ওর খালাতো ভাইয়ের সাথে দেখা
বললাম, মজিদ ভাইয়ের বউ মারা গেছেন
অথচ আমাকে এতোদিন জানান নি কেন?
কে বললো?
মানে? মারা যায় নি? মজিদ ভাই-ই তো বললেন
ওর বউ তো এক ছেলের সাথে ভেগে গেছে মেয়েকে ফেলে
আমি নির্বোধ হয়ে গেলাম, অভিঘানিত হৃদয়
একটা লোক কী করে এতো বড় মিথ্যে বলতে পারে
নাকি লজ্জায়? ভাবতেই ঘৃণা আর হতাশা চেঁপে ধরল
তারপরই হঠাৎ মনে হলো, সে তো মিথ্যে বলে নি
আত্মার ক্যানসারে অঙ্গজকেও করে অস্বীকার
আত্মজা যেখানে অপাংক্তেয়
দেহের ক্যানসারের থেরাপি আছে কিন্তু আত্মার?