**********( পরিচয় পর্ব ) *********


ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ, মেঘের ভেলায় চড়ে দিনরাজ
আমার ছিল সর্দি জ্বর, তারউপর ঘুম জড়ানো ভোর
শিয়রের পাশে এসে ফুফাত ভাই "রাফি"
শুরু করলেন জোড়াজুড়ি, যেতেই হবে বাইরে
যতই অসুখ হোক, যতই হোক সর্দি জ্বর!
মেঘলায় কুয়াশায় দিনের শুরুতেই কেমন চুপসে
আমর মনটাও তারচেয়ে মুহ্যমান, নিরুত্তাপ
তারপরও ভাইটির আবদারে, বের হতে হল
প্যান্টের উপর গেঞ্জি, চাদর দিয়ে দিলাম ঢেকে
বাড়ির পাশে প্রাইমারী স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়ানুষ্ঠান
সেখানে নাকি আছেন, উনার স্বপ্নের রাণী
মাঠের পশ্চিম পাশে, টিলার উপরে কিছু ক্ষুদেনী
ঝাকড়া চুলের এক শ্যামলীকে দেখিয়ে বলল,
"তোর ভাবীসাব" গমগমিয়ে উঠল চারপাশ!
আঁড়চোখে তাকাই, অমনি দেখি আমার দিকেই আছে চেয়ে
অপলক, এক দুই তিন প্রহর যায় সময়ের কাটা বেয়ে
শুধুই চোখাচুখি, তারপর, দৃষ্টিটা অন্যদিকে সরিয়ে
বললাম, ওমা! এতো ছোট্ট, কোন ক্লাসে পড়ে?
ফাইভ পাশ এইবার! তাতে কী,
এখনো ঢের সময় বাকি দুজনের
এখন শুধু প্রেম, শুধুই প্রেম! গড়ব প্রেমের সমুদ্দুর
বললাম, ও কি প্রেমের মানে জানে? নামটা কী শুনি
"মিথী"। আমার চেয়ে বুঝে বেশি
তাই নাকি? বুঝলাম চাঁপাবাজির পড়েছি খপ্পরে
বললাম, কথা বললেন না যে? কিংবা সাক্ষাত প্রবচন
এখন প্রেমের কিসতি চলে শুধু চোখের ইশারায়
এখনো শুরু হয় নি বাক বিনিময়, বললেন তিনি হেসে
আমিও বুঝলাম কেমন প্রেমের কাহিনী হল শুরু
আমিও যে হব তার চরিত্র, পার্শ্ব! অথবা বিপরীত!
পুরস্কার বিতরণীর সময় আবার দেখা হল, দেখি তাকিয়ে
আমিও অপলক ঘাড় বাঁকিয়ে, আজ হবে শুধু চোখাচুখি
কতক্ষণ মনে নেই, শুধু মনে আছে, ওর ভ্রুর কাঁপনে
দৃষ্টিটা ফেলে তাল হারিয়ে, তারপর চলে যায়
এভাবেই হল পরিচয়, তারপর থেকে প্রতিদিন
ও যায় মেয়েদের হাইস্কুলে, আমি বয়েছে
রাস্তায় দুই মাইল, পায়ে পথ চলা
দেখা হলেই শুধু চাওয়া-চাওয়ি
কী সুন্দর খেলা! অপলক দৃষ্টির রোমাঞ্চ!
এভাবে চার বছর যায় কেটে। কোনো কথা হয় নি
ভাইটিও বলে নি তারপর প্রেম কোথায় পৌঁছল
তবে আমাদের মাঝে চলছিল, কিছু যেন কী!
শুধু চেয়ে থাকা, দৃষ্টির কাঁপন আর মলিত বদন
শুধু চেয়ে থাকা আর শুধু ...........চেয়ে থাকা!


**********( প্রেম পর্ব )**********


আমি যখন কলেজে পা রাখি, ও তখন নাইনে
সহপাঠি ফারহানা, ওর প্রতিবেশি
বললাম, দিস না একদিন ভুমিকাটা করে
দুজনায়, হৃদয়ের সাথে! কথা বলা কম জটিল নয়
ফারহানাও করে টালবাহানা, একদিন দু'দিন করে
তারপর একদিন,  আজ তোদের মুখের তালা খুলাব
কলেজের পুকুর পাড়ে ডেকে নিয়ে, আমাকে বলে
আমি তো খুশিতে হৃদয় হারা
বুক করে ডিপ ডিপ, মনে নেই স্থিরতা
তাড়াতাড়ি চলে আসি বাড়ি, বিকেলের সেই ক্ষণে
"সুন্দর বাড়ির" ভাঙ্গা বাশের সাঁকোতে বসে
অপেক্ষায় মাত্র এক মূহুর্ত! দূরে দেখা যায় তার ছায়া
ফারহানা আমার পাশে এসে বলল, যা ঐখানে গিয়ে কথা বল
আমি ধীর পায়ে হেটে, তার সামনে দাঁড়িয়ে
মাথাটা নিচু করে, তখনও তাকে দিইনি নজর
প্রাণপাখি দেয় উড়াল, খালি বুঝি হৃদয়ের খাঁচা
ঐমনি ছুটে এসে ফারহানা বলে, তোদের দ্বারা হবে না
এখনি ফুট; বড় চাঁচা! কী যে ঘটে কপালে
তারপর প্রাণপনে, কোনো দিকে না চেয়ে
দিলাম ভোঁ-ধৌড়,


...........................................................
................................ (ক্রমশ..............