খোলা জানালার বাইরে
কিছু মেঠোঘাস আর বনফুল
দূর দিগন্তে দেখা রূপালি বিকেল
খোলা প্রান্তর, দূরে-
উন্মুক্ত আকাশ।শিহরিত করে প্রাণ
শ্রান্ত করে মন।
আমার রান্নাঘরের জানালা থেকে
আমার একতলা এই বাড়িটায়
শোবার ঘরের প্রশস্ত বারান্দা থেকে
দেখি, প্রকৃতির হাসি-কান্না, উদাসি প্রান্তরে
গায়ে মাখি রোদ কিংবা আকাশের অশ্রু!
দেখি মুক্ত দিগন্তে আকাশের সাজ
পাখিদের কলরব, ফুলেদের শুভ্রতায়
আমাদের আইন! প্রকৃতির নিষিদ্ধতা
পৃথিবীর শর্তাবলী। মানবীয় কার্যাবলীতে
প্রকৃতির স্বাধীনতা।
মাটির বিধান
আমাকে মোহিত করে, আমাকে নাচায়
আমার দৃষ্টিটা সব সময়ই থাকে স্বাধীনতায়
কখনো নগ্ন জোছনায়, কখনো নক্ষত্রের নিষিক্ততায়
অথবা বৃষ্টির ঝাপটায় ভিজে যাওয়া মুখে
আমাকে আন্দোলিত করে, বাঁচার প্রেরণায়
আগামীর সুখ স্বপ্নে, অস্থির পৃথিবীতে।
সেটা এক বছর আগের কথা।


এখন
আমার রান্নাঘরের জানালার সামনে দেয়াল
গগণচুম্বি অট্টালিকার বিকৃত দাম্ভিকতায়।
বারান্দার সামনে বিত্তের প্রাচীর!
দৃষ্টিটা আজ কারারুদ্ধ। ভাবনা বন্দি আপন ঘরে
সভ্যতা আমাদের করেছে বিভাজন।
মনুষ্যত্বের নতুন সংজ্ঞায়
বৈভব শেখায় দুজনার দূরত্ব।
কংক্রীটের কী মাহাত্ম্য?
আমি এখন বন্দি, আমার গন্ডিতে
আমার পৃথিবীতে এখন আর আকাশ নেই
নেই খোলা প্রান্তর, পূবালি হাওয়ার সিক্ততা।
আমি বন্দি মানবিকতার সীমাবদ্ধতায়
বিত্তের বদ্ধতায়, সভ্যতার চাদরে।


সঙ আর কৃতির মাঝে বিরাট বৈষম্য
আমি দেখি বিত্তের চাকচিক্য, বৈভবের জৌলুস
আর সভ্যতার নগ্ন আগ্রাসনে
স্বার্থের দেয়াল। নাগরিক স্মারক।


তারপরও আমার মাথার উপর আছে ছাদ
ছাদের উপর মহাশূণ্যতায়
নক্ষত্রের হাতছানি। জোছনার প্লাবনধারা
আমি দেখি, কিভাবে তাদের করছে গ্রাস!
যান্ত্রিক সভ্যতা আর বিত্তের সংস্কৃতি
যেখানে হারায় চিত্তের স্বাধীনতা
রিক্তের বেদনায়। অস্তিত্বের ধ্বংশ।
শস্ত্র সভ্যতার আগ্রাসনে
অসহায় প্রকৃতি।
অসহায় মনুষ্যত্ব
অসহায় সময়!
তবুও আমরা
মানুষ।