তুমি বলেছিলে, ভদ্র ছেলেরা কখনো বের হয় না
ঘর থেকে বাইরে, আলো থেকে আঁধারে।
আমি ভদ্র হতে চাই বলে, বের হই নি কখনো।
এখন তুমি বলছ, আকাশের কী রঙ?
পাহাড়ের উচ্চতা জানো কি? কী ছেলে তুমি
জানো না সাগরের বিশালতা! আমি বললাম-
ভালো করে হয় নি তো দেখা এ আকাশ
কী রূপ পাহাড়ের, সাগরের কী চাহিদা!
তুমি বললে, কী অভদ্র ছেলে তুমি
শিখেছো শুধু মুখে মুখে তর্ক, অজ্ঞতা!


তুমি বলেছিলে, পাশের ছেলেদের সাথে মিশবে না
যারা তোমার সাথে পড়ে, এরা সবাই ভালো নয়
তোমার প্রতিবেশী, তোমার সহপাঠিদের এড়িয়ে চলবে।
কখনো এদের সাথে বেশি কথা বলবে না
কখনো বাড়িতে আনবে না, কখনো নয়-
আজ তুমি বলছো, তুমি বড্ড একগুয়ে ঘরকুণো
আত্মমুখি হলে জগতকে জানবে কী করে?
বন্ধু ছাড়া মানুষ বাঁচতে পারে কি? পারে কি
সমাজের সাথে খাপ মিলাতে।


তুমি বলেছিলে, ভালো ছেলেরা কখনো খেলায় মত্ত হয় না
লেখাপড়া ছাড়া তাদের আর কোনো আরাধনা নয়
আমি মেনে নিলাম, ভালো পড়ুয়া হতে চাই বলে
ভালো পাঠক হতে গিয়ে সময়কে বাঁধি নি খেলার সাথে।
আজ তুমি বলছো, কেমন ছেলে তুমি ফুটবল খেলতে পারো না
ক্রিকেট কি জানো না, চেনো না দাবার ঘুটি!
তোমার বন্ধুকে দেখো, টিভিতে তার মুখ দেখা যায়!
আমি বললাম, জীবনে কখনো বলে লাথি দিয়ে দেখি নি
মাঠে বসে কখনো সময় করি নি পার।


তুমি বলেছিলে, সদা সত্য কথা বলবে, সত্পথে চলবে
সবাইকে সমান চোখে দেখবে, ভালোবাসবে
আইনকে মানবে আর মানবে গুরুজন!
আমি মেনে নিলাম, আর তোমার হলো জেল!
তুমি বললে, কী ছেলে তুমি, একেবারেই অপদার্থ!
নিজের বাপকে করলে দোষি, কখন সত্য বলতে নেই
তাই শিখলে না কভু। তোমার সকল শিক্ষাই ব্যর্থ
সময়ের সাথে চলতে পারবে না তুমি
কখনো পারবে না জীবনে উন্নতি
পারবে না সবার সাথে তাল মেলাতে।
আমি বললাম, আমি এক, আমার সত্তায় আমি
পারবো না হয়তো বহুরূপি হতে। এখনো পারি নি
এখনো পারি নি বুঝতে, কী চাও তুমি
কী হতে হবে আমাকে? বহুরূপি? নাকি
একসাথে সব, একের ভিতর সব?