হাবিল, কাবিল ধরার বুকের প্রথম আদম সন্তান
আল্লাহর তরে করেছিল তারা প্রথম ধরায় কোরবান।
একখানি ভেড়া আল্লাহর নামে কোরবানী দেয় হাবিল
খেতের শস্য আল্লাহর নামে কোরবানী করে কাবিল।


অতীব প্রিয় জিনিসটি তোমার করো হে কোরবান -
আরও পরে আসে ইব্রাহীমের প্রতি আল্লাহর ফরমান।
অনেক সম্পদ দানের পরেও থামে না সে নির্দেশ
অতীব প্রিয় জিনিসটি তাঁর তখন সে বোঝে বেশ।


বৃদ্ধ বয়সের প্রার্থনাতে পাওয়া যে পুত্র সন্তান -
ইসমাইল তাঁর এতোই প্রিয়, নয় ততো নিজ প্রাণ।
তাঁরে কোরবানী দিতে উদ্ধত হলে আল্লাহর তরে
তাঁর বদলে পশু কোরবানী আল্লাহ বিধান করে।


সেই প্রথাতেই সারা বিশ্বের সকল মুসলমান
বছরে একবার ইদুল হজ্জে করে পশু কোরবান।
সেই মাংস গরিব দুখীর মাঝে হয় বিতরণ
অপুষ্ট দেহে আমিষ জোটে খুশীতেও হাসে মন।


আল্লাহর সেই চাওয়াতে ছিল না আদৌতে প্রয়োজন
মানুষ অথবা পশুর রক্ত, মাংস কিংবা জীবন।
আল্লাহর সেই চাওয়াতে ছিল আল্লাহ-প্রেমের ছুরিতে
খুন হয়ে যাক লোভ-পশুত্ব মানব-হৃদয়-পুরিতে।


পৃথিবীর প্রতি মানুষের মনে মোহময় ভালোবাসা
হৃদয়ে আনে লোভ ও হিংসা, গর্ব-সর্বনাশা।
মানুষের প্রতি শত্রুতা আনে, ঘৃণাতে ভরে মন -
আল্লাহ চেয়েছে ত্যাগের ছুরিতে হোক তাই নিরসন।


কোরবান মানে মুসলমান আজ বুঝেছে পশুর জবে'
গরু, ছাগল, উট! ধন্য হ'লিরে কোরবানী হয়ে তবে!
শেষ যাত্রায় খোদ্-দরবারে যদি কোনদিন থামিস
গর্বে বলিস গরীবজনে গিয়েছিস দিয়ে আমিষ।


হয়তো খোদা ও ফেরেস্তারা কাঁদিছে বসিয়া স্বর্গে
ধরাতে শুধুই ভোগের হর্ষ জীবনের উৎসর্গে।
পাপের টাকার বস্তাতে কেনা কার পশু কত দামী -
কোরবানীতে কোরবান নেই, শুধু এই ভন্ডামী।


ঘরের ভেতর লুকিয়ে রেখে হাজার পাপের বোঝা
দিনরাত চলে তীর্থে, কর্মে মিথ্যে পূণ্য খোঁজা!
ইমানে মরা মুসলিম শুধু তোরে করে কোরবান
মাংস খায় আর নিজেকে ভাবে সাচ্চা মুসলমান।


আত্মা যখন পৌঁছাবে তোদের আল্লাহর দরবারে
ধরায় আবার ইব্রাহীমকে পাঠাতে বলিস তাঁরে।
মানুষ এবং আল্লাহর প্রেমে হবি তোরা কোরবান
ত্যাগ-চেতনায় কোরবানী দেয়া শিখিবে মুসলমান।


রোহিঙ্গাতে মুসলিম আজ বৌদ্ধের কোরবান
বিশ্ব-বিবেক বন্ধ করিয়া রহিল চক্ষুখান।
আত্মা তোদের পৌঁছাবে যখন নাফনদী পারে রাকানে
দেখবি মানুষ কোরবান করে শত সহস্র শয়তানে।


ইসমাইলের খুনে ভেজে আজ ধরাতে মাটির বুক
ইব্রাহীমের বড়ই অভাব, তাই কারো নেই দুখ।
ইসমাইলের হাত, পা বাঁধা চোখ দুটি শুধু খোলা
কোথা ফেরেস্তা ঠেকাতে আজ যে খড়গ উর্ধে তোলা?


অদূরে উনুন, তপ্ত আগুন, ক্ষণে ক্ষণে তোলে ফণা
মশলা মাখিয়ে ঝলসানো হয় প্রতিটি মাংসকণা।
গৃহস্বামী দেখে মসলা-রান্না সব যেন হয় ঠিক
অতিথির জিভে শুধু জল আসে ঘ্রাণে ভরা চারিদিক।


মসলা মাখানো মুসলমানের মাংস পুড়িছে আগুনে -
কটি কোরবান? আজকে বসে অমুসলিম যায় গুনে।
যদি কোনভাবে প্রাণে বাঁচে আজ একটি ইসমাইল
দেখে যায় সে জ্ঞাতির রক্তে ভাসিছে নাফ-নাইল।


কাল যদি সেই খড়গ তুলিয়া পাষাণ কসাই প্রাণে
কোরবান দেয় গৃহস্বামী, সাথে অতিথি ও শয়তানে
ভাবিয়া দেখো বলিবে কি তারে কাল হে বিশ্ববাসী
পাষাণ, কসাই নিষ্ঠুর এক মুসলিম-সন্ত্রাসী?


---------------------
কোরবানীর সময় রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর মিয়ানমার জান্তাদের অকথ্য বর্বরতা,
নির্যাতন, বাসভুমি পুড়িয়ে তাদেরকে বিতাড়ন, মিয়ানমার সরকার ও স্বার্থান্বেষী
বিশ্ব-বিবেকের অস্বাভাবিক নীরবতার পরিপেক্ষিতে লেখা।