বুদ্ধিমান লাল্টু মিয়া (তৃতীয় ও শেষ খন্ড)


বাপের যোগ্য লাল্টু মিয়ার ছিল একটি ছেলে
সাধ্যটা কার রাখে তাকে আটক ক’রে জেলে|
বুদ্ধি বিদ্যায় কম কি বল পাশ দিয়েছে ক'টা
লম্বা সুঠাম দেহখানা মাথায় ছিল জটা|
যোগ্য বাপের যোগ্য ছেলে সঠিক চাকুরী মেলে
সবাই জানে দারোগা হবে বছর কয়েক গেলে|


লাল্টু মিয়ার অনেক জমি, এখন অনেক টাকা
তবু যেন জীবনটা তার কেমন লাগে ফাকা|
লাল্টু মিয়া দেখাতে চায় দেশের প্রতি প্রীতি
সেই কারণেই করতে হবে সরকারী রাজনীতি|
লাল্টু মিয়ার বাড়ি এখন এম,পি, সাহেব আসে
মুক্তিযোদ্ধা (?) লাল্টু মিয়া দেশকে ভালবাসে
এম,পি,'র সাথে সভায় সভায় লাল্টু মিয়া ঘোরে
এম,পি, সা'বের আগে খানিক ভাষণ সে দেয় জোরে|
ক'টা বছর ঘুরে শেষে ভোটের সময় এলো
হঠাত ক’রে এম,পি, সাহেব উধাও হয়ে গেলো|
বন্ধুহারা লাল্টু মিয়া এখন কি আর করে
নিজেই শেষে ভোটে দাড়ায় দেশের লোকের তরে|
সবাই জানে লাল্টু মিয়ার ভাগ্যে বৃহস্পতি
তার পথে যে বাধ সাধে তার কি যেন হয় গতি|


লাল্টু মিয়া এম,পি, হয়ে স্বপ্ন দেখে ঘুমে
লাল্টু মিয়া প্রধান মন্ত্রীর পদযুগল চুমে|
প্রধান মন্ত্রী খুশী হ’য়ে মন্ত্রী বানায় তাকে
আদর করে প্রধান মন্ত্রী কাল্টু ব’লে ডাকে|
লাল্টু মিয়া আনন্দে হয় হেসে কুটি কুটি
প্রধান মন্ত্রী কাল্টু মিয়া কি আদর্শ জুটি!
লাল্টু মিয়া বক্তৃতা দেয় হাত নেড়ে সংসদে
“দেশটা আজি ধ্বংশ করে গুটি কয়েক বদে
প্রগতি চাই, উন্নতি চাই, দেশে গণতন্ত্র চাই
বিরোধী দল শত্রু তার, ওদের মারা যন্ত্র চাই”|
লাল্টু মিয়ার হাতের ঘায়ে বউ-এর নিদ্রা ভাঙে
হাতের ঘড়ির আঘাতে তার কপালখানা রাঙে|
বউ বলে, “হায়! ঘুমের মাঝেও কিজে তুমি কর
দেশের মানুষ দেশের মানুষ করেই তুমি মর|”
লাল্টু মিয়ার ঘুম ভাঙে তো ভাঙে নাকো রেশ
লাল্টু মিয়া মন্ত্রী হলে ধন্য হবে দেশ!