হে পিতঃ, তোমার রক্তের ছাপ যে হাতে
কোনোদিন যদি রেখে থাকি হাত সেই হাতে
তবে আমি পিতৃ হন্তারক, ক্ষমার অযোগ্য,
আমার ফাঁসি হোক সহস্র বার|
কিন্তু বলো, তোমার উদার হাত ধরে
যারা উঠেছিল সম্পদ ও ক্ষমতার শিখরে
সেদিন তাদের হাতে কি পেয়েছিলে
একগুচ্ছ ফুল, রাতের অন্ধকারে অগোচরে?
তোমার সাহসে উজ্জীবিত সাহসী কেউ কি
ছিলনা সেদিন যাদের অথবা যাদের উত্তরসূরির
বক্তৃতা, লেখা ও আবৃত্তিতে আজ আগুন ঝরে?
কান্নায় আজ বুক ভাসে যাদের, তাদের চোখ কাঁদে
আর মন সেই একই শিখরারোহনের মন্ত্র জপে|
ওরা বারবার শপথ নেয় তোমার স্বপ্নের,
আর নিজের স্বপ্নে বিভোর থাকে, যা দিয়ে যায়
তাদের ভবিষ্যৎ বংশধরদের, যাদের প্রস্তুতি
হয় নির্বিঘ্নে দেশান্তরে| তোমার বলিদান
হয়েছে তাদের জন্ম জন্মোত্তরের বিনিয়োগ|
তাই তো তারা আজ তোমার স্বপ্নের কথা ব’লে,
তোমার চলা সেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পথে চ’লে,
সম্পদের পাহাড় গ’ড়ে আহবান জানাই ক্ষুধিত,
বঞ্চিত, নির্বিচারে নির্যাতিত, ধর্ষিত জনতাকে
দেশের কাছে কি পেলো সে প্রশ্ন না তুলে
দেশকে কি দিল সেই মর্মবোধে দেশ সেবায়
আত্ম-নিয়োগ করতে| তোমার কি একটা স্বপ্ন
ছিলনা সম্পদের বন্ঠনে সবাই পাবে জীবনের নূন্যতম?
যাদের জীবনে প্রতিদিন তার বিরুদ্ধ প্রতিফলন
তারা যদি হয় তোমার প্রিয় সন্তান,
তোমায় পিতা বলে আমি আজ ডাকি কোন লজ্জায়?
আমি আজ দুমুঠো ভাতের তরে দেশান্তরে,
জাতির ভবিষ্যৎ কর্ণধার হওয়ার স্বপ্নে নয়|
তাই আমার চোখ থেকে যদি আজ দু’ফোটা অশ্রু ঝরে
জেনো তা তোমার প্রতি নিঃশব্দ, নিঃস্বার্থ শ্রদ্ধায়|
স্বর্গ থেকে প্রার্থনা করো, দেশের ভবিষ্যৎ কর্ণধার
হওয়ার জন্যে এই দেশান্তর যাদের প্রস্তুতি-ভূমি,
তারা যেন এ দেশে আমার দুমুঠো ভাত না মারে,
এখানকার নির্মল বাতাসকে বিষাক্ত ক’রে
আমাকে শ্বাসরুদ্ধ না করে|


রচনা: ১৫ আগস্ট, ২০১৬