ওহে দরিদ্র, জীবনে যদি করিতেই হয় ভিক্ষা
সদাই রাখিও জাগ্রত মনে এই ভিক্ষুকের শিক্ষা।
ভুলেও কখনো চেয়োনা কিছু স্বয়ং রাজার কাছে
তাহলে অচিরে হারাবে তুমি তোমার যা কিছু আছে।


তার চেয়ে চেয়ো গরীবের কাছে, যদি নাই পারে দিতে
তোমার যা আছে কোনোদিন সে পারিবেনা তা নিতে।
মাথা গুঁজবার ঠাঁই চেয়ে যদি করো রাজ্-দরবার
ভাগ্যে তোমার নিশ্চিত জেনো লেখা আছে কারাগার।


গরীবে যদি নাই পারে দিতে তোমার চাওয়া সে ঘর
গামছা বিছিয়ে শু’তে দেবে সে, সাথে দেবে অন্তর।
বুভুক্ষু তুমি, ক্ষুধায় যদি চেয়ে থাকো রাজ্-খাদ্য
পেটটি তোমার অচিরে শুনিবে লাথী ও গুলির বাদ্য।


গরীবের যদি নাই হয়ে থাকে সাতদিন কিছু রান্না
গান নাই হোক, সবাই মিলে একসাথে হবে কান্না।
তাই শুনে দেখো শূন্য থালায় কেউ ছুঁড়ে দেবে টাকা
থালাটিকে দেখো ভাঙে না যেন রাজার গাড়ির চাকা।


সাবধানে কেঁদো, কান্না যেন না ছোঁয় রাজার কান
সুখের দেশের অবমাননায় হারাবে তোমার প্রাণ।
কোনোদিন যদি ভুল করে তুমি চেয়ে থাকো রাজ্-ঋণ
সারা জীবনের দাসত্ব-খত লিখে দিও সেই দিন।


গরীবের যদি কিছু নাই থাকে, দেবে ভিক্ষার ঝুলি
বিনা পয়সায় আরো শিখে নিও ভিক্ষা চাওয়ার বুলি।
একদিন দেখো সবে মিলে হবে ভিক্ষুক-দল ভারী
রাজ্-ভাঁড় চা’বে রাজ্-সকাশে ভিক্ষুক-নিধন জারি।


তোমাদের নামে কবিতা লিখে কবিরা করিবে আয়
তোমাদের কত মাহাত্ম জারি সাহিত্য সিনেমায়।
তোমাদের নামে চিৎকার দিয়ে কেউ হয়ে যাবে নেতা
নেতা থেকে যেই রাজা হবে, সব ভুলে যাবে সে তা।


তোমাদের নামে অর্থ-বিজ্ঞ খুলিবে অর্থাগার
কোটি কোটি টাকা জমা হবে সেথা, বেচিয়া তত্ত্ব তার।
তোমাদের নামে ধর্ম-গুরুরা ধর্মের গান গায়
যুগ যুগ ধরে তোমরা থাকো, পৃথিবীতে সবে চায়।


পৃথিবীর বুকে এতো ভিক্ষুক তোমাদের পানে চেয়ে
এদের করোনা চির-ভিক্ষুক, পৃথিবীটা ছেড়ে যেয়ে।


রচনা: ২৯ আগস্ট, ২০১৬